গাজীপুরের শ্রীপুরে টয়লেট থেকে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে গৃহবধূর স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। আজ শনিবার বেলা দেড়টার দিকে মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের সলিংমোড় এলাকা থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। ওই গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর স্বজন ও প্রতিবেশীদের। মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিন্টু মোল্লাহ মৃতদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত গৃহবধূ আমেনা খাতুন (২০) মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের সলিংমোড় এলাকার আনোয়ার হোসেনের (২৬) স্ত্রী। তাঁর বাবার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার কুটিয়াপাড়া গ্রামে।
এদিকে আনোয়ার হোসেন মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের সলিংমোড় এলাকার মঞ্জুর আলীর ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি।
আমেনা ও আনোয়ার দম্পতির লাভিব হোসাইন নামে পাঁচ বছর বয়সী ছেলে ও আয়েশা সিদ্দিক জান্নাত নামে দেড় বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।
নিহতের মা মনোয়ারা বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে মেয়েকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করত। এ নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার একাধিকবার সালিস বৈঠক করেন, কিন্তু তাতেও নির্যাতন থামেনি। আজ বেলা ১১টার দিকে মামি রেনু আক্তার মোবাইল ফোনে জানায়, মেয়ে মারা গেছে। এরপর আমি আমার লোকজনসহ মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে এসে দেখি খালি বাড়ির একটি রুমের ভেতরে টয়লেটে মেয়ের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে।’
মনোয়ারা আরও বলেন, ‘মেয়ের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সব লোক পালিয়ে গেছে। এরপর আশপাশের লোকজনের কাছে জানতে পেরেছি গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে মেয়েকে অনেক নির্যাতন করেছে। একপর্যায়ে আহত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে আসে। তারপর প্রতিবেশীরা মেয়েকে রাস্তা থেকে তুলে এনে বাড়িতে দিয়ে গেলে দ্বিতীয়বার মারধর করে হত্যা করে পালিয়ে যায় ওরা। শাশুড়ি আনোয়ারা, দেবর দেলোয়ার হোসেন ও মামি রেনু আক্তার তাকে সব সময় নির্যাতন করত। ওরা মেয়েকে খুন করে আমার নাতি-নাতনি নিয়ে পালিয়েছে।’
প্রতিবেশী মোহাম্মদ রমজান আলী বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে ওই গৃহবধূ আহত অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে ছিল। এরপর স্থানীয় আদম আলী ওই গৃহবধূকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। এরপর দ্বিতীয় দফা মারধর করে তাকে হত্যা করে। ধারণা করা হচ্ছে, গৃহবধূ আমেনা খাতুন মারা যাওয়ার পরপরই রাতেই সবাই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।’
মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিন্টু মোল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বসতবাড়ির একটি ঘরের টয়লেটের ভেতর থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গৃহবধূর থুতনির নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সব লোক পলাতক রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমাদেরও সন্দেহ রয়েছে। যেহেতু ওরা পালিয়ে গেছে, তাহলে রহস্য আছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।’