মেহেরপুরে গাংনীতে মৌমাছির হুলে প্রায় ৩০ জন পথচারী আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বামন্দী-দেবীপুর রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, রাস্তার পাশে থাকা বাবলাগাছে একটি মৌমাছির বড় চাকে বাজ পাখি আক্রমণ করলে মৌমাছি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পথচারীদের হুল ফুটিয়ে দেয়। এতে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছে। আহতেরা স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। পথচারীরা খুব আতঙ্কের মধ্যে চলাচল করছে।
তারা আরও জানান, এই একই গাছের মৌচাকের মৌমাছির হুলে গত বছর প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছিল।
ডি জে এম সি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শেখ মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘আমি বামন্দী থেকে স্কুলের উদ্দেশে আসছিলাম। এ সময় একটি মৌমাছি আমার কানের ভেতরে ঢুকে যায়, কিন্তু হুল ফোটাতে পারেনি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে মৌমাছি হুল ফুটিয়ে দেয়।’
এই শিক্ষক আরও বলেন, ‘স্থানীয়রা আমাকে ভ্যানে করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তার কানের ভেতরের মৌমাছি বের করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে। আমাকে প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি মৌমাছিতে হুল ফুটিয়েছে।’
উপজেলার কোদাইলকাটি গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমরা ছয়জন ইট ভাঙার গাড়ি নিয়ে বামন্দী থেকে দেবীপুরের দিকে আসছিলাম। এ সময় রাস্তার পাশে থাকা বাবলাগাছের মৌমাছি আমাদের হুল ফোটাতে থাকে। মৌমাছির হুলে আমাদের শরীরে জ্বর এসে যায়। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা নিয়েছি।’
মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘গাড়ি নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দেবীপুর গ্রামে ঢুকতেই মৌমাছি হুল ফোটাতে শুরু করে। আমার শরীরে মৌমাছি অনেক হুল ফুটিয়েছে। শরীরে জ্বর এসে গেছে।’
দেবীপুর গ্রামের ফারুক আহমেদ বলেন, প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ মৌমাছির হুলে আহত হচ্ছে। আজকে প্রায় ৩০ জনকে হুল ফুটিয়ে দিয়েছে।
দেবীপুর গ্রামের গ্রাম্য চিকিৎসক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, মৌমাছির হুলে আহত অনেকেই এসে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। মৌমাছির হুলে আহত হয়ে এক সপ্তাহে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন এসেছে। আজকেও আমার কাছে ৮ থেকে ১০ জন এসেছে। আর অন্যরা বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছে। তবে মৌমাছির ফোটানো হুল নিয়ে অবহেলা না করে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর প্রায় ৪০ জন পথচারীকে মৌমাছি হুল ফুটিয়ে আহত করেছিল।
বামন্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ওবায়দুর রহমান কমল বলেন, বামন্দী-দেবীপুর সড়কে মৌমাছির কামড়ে আনুমানিক ৩০ জন আহত হয়েছে। এ সময় তাদের উদ্ধার করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রায় ৪০ জনকে হুল ফুটিয়েছিল মৌমাছি।