৪৩ ঘণ্টা তল্লাশির পর কুষ্টিয়া গড়াই নদে গোসলে নেমে নিখোঁজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদের লাশ উদ্ধার হয়েছে। আজ বুধবার নদের ভাটিতে ডুবন্ত নৌকার নিচ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ সময় নিহতদের বাবা, বোন–ভাই ও স্বজনদের আহাজারিতে নদের তীরের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মণ্ডল লাশটি উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, আজ বুধবার সকালে খুলনা থেকে আসা ডুবুরি দলের সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় বিল্লাল মাঝির ছেলে কালেখার নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি দল উদ্ধার কাজে যোগ দেয়। দলটি তানভীরের ডুবন্ত এলাকার পাশেই তল্লাশি কাজ চালাতে থাকে। স্থানীয় ডুবুরিদের জানা ছিল ঘটনাস্থলের সামান্য দূরে একটি ডুবন্ত নৌকা রয়েছে। সেই নৌকার কাছ থেকে এর আগেও নিখোঁজ একটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল।
সেই সূত্র ধরে স্থানীয় দুজন ডুবুরি নৌকার তলদেশে প্রচণ্ড বল প্রয়োগের মাধ্যমে নৌকাটি পানির নিচ থেকে তোলার চেষ্টা করলে এটি ভেঙে যায়। এতেই নৌকায় বেঁধে থাকা তানভীরের গলিত দেহ পানিতে ভেসে উঠে এবং ১০০ গজ দূরে সৈয়দ মাছউদ রুমী সড়ক সেতুর গার্ডারে বেঁধে যায়। পরে সেখান থেকে লাশটি ওপরে তোলা হয়।
খবর পেয়ে কুষ্টিয়ার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক আরিফুজ্জামান, কুমারখালীর ইউএনওসহ সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে লাশ লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে এনে কফিনে ভরা হয়। এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে দুপুরের পর লাশ নিয়ে বরগুনা শহরের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেন পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের পক্ষে তানভীরের বাবা অধ্যাপক আব্দুল মালেক ছেলের মরদেহ গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ১৩ জন ছাত্র মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরতে আসেন। ওই দিন মেহেরপুর থেকে কুষ্টিয়ায় পৌঁছে সার্কিট হাউসে খাওয়া–দাওয়া করে বিকেলের দিকে তাঁরা শিলাইদহের কুঠিবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পথে কুমারখালী লাহিনীপাড়া এলাকায় গড়াই নদে রেল সেতুর নিচে গোসল করতে নামেন তিন বন্ধু। এ সময় দুই বন্ধু তীরে উঠতে সক্ষম হলেও তানভীর আহমেদ (২৩) পানিতে তলিয়ে নিখোঁজ হন।