প্রায় ৮০০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শ্যামসুন্দর মন্দিরটি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা এলাকায় মঠবাড়ি নামেও বেশ পরিচিত। মন্দিরটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তালিকাভুক্ত থাকলেও সংস্কারের অভাবে চুন-সুরকি দিয়ে নির্মিত শৈল্পিক কারুকাজ করা ইট ধসে ভবনগুলো বিলীন হয়ে যাচ্ছে। মন্দিরে ভ্রমণপিপাসুদের নিরাপত্তা ও অবকাঠামো সংরক্ষণে সীমানা প্রাচীরে কড়া নজরদারি ব্যবস্থা না থাকায় মন্দিরের চারদিকে ঘনবাগান ও অন্ধকারাচ্ছন্ন কক্ষে অসামাজিক কার্যকলাপসহ মাদকের আস্তানায় রূপ নিয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে দিনে ও রাতের বেলায় পরিদর্শনের নামে অধিকাংশ সময়ে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে। যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে নোংরা করা হচ্ছে মন্দির। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে এলাকার শৃঙ্খলা নষ্ট করার পাশাপাশি ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবাসহ নানা ধরনের মাদক গ্রহণ ও বিক্রির বিশেষ স্থান হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে শ্যামসুন্দর মন্দিরটির অন্ধকারাচ্ছন্ন বিশেষ কয়েকটি কক্ষ। এ সকল অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদকের ভয়াবহতা রুখতে এবার মন্দিরে ১৩টি প্রবেশদ্বার ঢালাই দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের শ্যামসুন্দর মন্দির কমিটির সভাপতি বাবু দেব প্রসাদ চৌধুরী।
শ্যামসুন্দর মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক জগবন্ধু নন্দী বলেন, ‘মন্দিরের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় এবং ভ্রমণপিপাসুদের চারদিকের পুরোনো নিদর্শন দেখতে একটি দরজা খোলা রাখা হয়েছে। বাকি ১৩টি প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেনজির হোসেন হেলাল বলেন, ‘মন্দিরটি সংস্কার করা খুবই প্রয়োজন। তবে মন্দির কমিটির কর্তৃপক্ষ প্রবেশদ্বারগুলো বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি আমাকে জানায়নি’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুলী বিশ্বাস বলেন, মন্দিরে অসামাজিক কার্যকলাপ বা মাদকের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে শ্যামসুন্দর মন্দির কমিটির কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। এমনকি মন্দিরের চারদিকের প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টিও জানানো হয়নি। এ বিষয়ে মন্দির কমিটির সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।