ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মোস্তাক শিকদার নামের এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় থানা ঘেরাও ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় ৬ পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের শৈলকুপা ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঁদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুই পুলিশ সদস্যকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলেছেন চিকিৎসক। সংবাদ পেয়ে পুলিশ সুপার আজিমুল হাসান হাসপাতাল ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
হামলার ঘটনায় পুলিশ বলছে, আজ রোববার সকালে মোস্তাক শিকদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এতে ক্ষিপ্ত আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শৈলকুপা থানা ঘেরাও করে হামলা করে। মোস্তাক শিকদার এজাহারভুক্ত আসামি। তিনি ৮ নম্বর ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের মৃত আব্দুস সাত্তার শিকদারের ছেলে।
এদিকে হামলাকারীদের ইটের আঘাতে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন কনস্টেবল তরিকুল ইসলাম বিনা, ইকবাল হোসেন, আব্দুস ছালাম, কালু তরফদার, ইমরান খান ও ডিএসবি এএসআই হারুনুর রশিদ। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম চৌধুরী।
আহতদের মধ্যে আব্দুস ছালাম ও ইকবাল হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এদিকে সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে আহতদের দেখতে আসেন পুলিশ সুপার আজিমুল হাসান।
হামলাকারীদের ইটের আঘাত ও পুলিশের টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটের আঘাতে ৬ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়। স্থানীয়রা বলছেন, হামলাকারীরা মেয়র কাজী আশরাফুল আজম ও নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নুর সমর্থক।
হাসপাতালে ভর্তি শৈলকুপা থানার কনস্টেবল ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমরা ডিউটিতে ছিলাম। বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে ৫০০–৭০০ মানুষ থানা ঘেরাও করে। এরপর কিছুক্ষণের মধ্যে তারা থানায় হামলা শুরু করে। তারা ইট ও পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে।’
সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ও পুলিশ লাইন হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক মেহেদী হাসান জানান, সদর হাসপাতালে ছয়জন পুলিশ সদস্য ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুজনকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের ক্ষত দেখে প্রাথমিকভাবে বলা যাচ্ছে না এগুলো কিসের আঘাত।
তবে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) ইমরান জাকারিয়া জানান, বর্তমানের পরিস্থিতি শান্ত আছে। বিকেল সাড়ে ৪টায় তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ১০ মিনিটের এ হামলা ঘটনায় অন্তত ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছে দুজনকে।
এদিকে হামলার ঘটনায় নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু বলেন, হামলার সময় তিনি ঝিনাইদহে অবস্থান করছিলেন। তাই ঘটনার বিষয়ে কিছু জানান না।