আট শর্তে নাটোরের লালপুর থানার একটি মাদক মামলায় দোষী সাব্যস্ত তিন আসামিকে দায়মুক্তি দিয়েছেন আদালত। ‘বাংলাদেশ প্রবেশন অব অফেন্ডার্স’ বিধি মোতাবেক বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন নাটোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ। অপরাধী প্রমাণিত হলেও সংশোধনের সুযোগ দিতে এ রায় দেন আদালত।
দায়মুক্তি প্রাপ্তরা হলেন, নাটোরের লালপুরের বাকনাই গ্রামের মো. কিবরিয়া (৩৬), পুরোনো ঈশ্বরদী গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে মো. মানিক (২৫) ও পাবনার ঈশ্বরদীর মাজদিয়া গ্রামের কালাম হোসেনের ছেলে মনিরুল ইসলাম (২০)।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে মাদক সেবনের অভিযোগে তাঁরা আটক হন। লালপুর থানার মাদক মামলায় (জিআর-৭৫ / ২০১৯) আদলতে সাক্ষ্যপ্রমাণে তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দোষী সাব্যস্ত হন। তবে আদালত তাঁদের আট দফা শর্তে এক বছরের জন্য দায়মুক্তি দিয়েছেন।
দায়মুক্তির শর্তগুলো হলো, বৃদ্ধ মা-বাবার দেখাশোনা ও ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করা; গ্রামের সরকারি রাস্তার পাশে বনজ ও ফলদ বৃক্ষরোপণ; মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়া; মাদক সেবন, পরিবহন ও বিক্রয় না করা; ধূমপান না করা; গ্রামের স্কুলে স্বেচ্ছাশ্রমে সেবামূলক কাজ করা; মাদকবিরোধী জনমত ও জনসচেতনতায় অংশগ্রহণ করা।
এসব কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের একজন প্রবেশন কর্মকর্তার অধীন তাঁদের ন্যস্ত করা হয়।
দায়মুক্তির পর মো. কিবরিয়া বলেন, আদালতের শর্তগুলো পালন করা আমাদের দায়িত্ব। এতে সমাজের একজন ভালো মানুষ হয়ে উঠতে পারব।
আইনজীবী দীনাই তাছরীন বলেন, সংশোধনে আগ্রহী যেসব অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আর কোন মামলা নেই-তাঁদেরই মূলত দায়মুক্তির সুযোগ দেন আদালত। এ ক্ষেত্রে তাঁদের দুজন অভিভাবক ও আইনজীবীর জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। আদালতের এই আদেশে সমাজে মাদকবিরোধী জনসচেতনতা সৃষ্টি হবে।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফজলুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, আদালতের আদেশের কপি এখনো তিনি হাতে পাননি। তবে অপরাধীদের সংশোধনের জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদে দায়মুক্তি দিয়ে থাকেন আদালত।