আশরাফুল আলম, কাজীপুর (সিরাজগঞ্জ)
সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের আরআইএম ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক রোকনুজ্জামান রাসেল। শখের বসে গেল বছর পরীক্ষামূলক দুই বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করেছিলেন। লাভের মুখ দেখায় এ বছর জমি বাড়িয়ে বাণিজ্যিকভাবে চার জাতের স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেছেন। তাঁর আশা আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে অধিক লাভ হবে স্ট্রবেরি চাষে।
সরেজমিন দেখা গেছে, কাজীপুরের দুবলাইয়ে সিরাজগঞ্জ-মেঘাই সড়কের পাশের দুই বিঘা পৈতৃক সম্পত্তিতে উচ্চ মূল্যের ফল স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেছেন রাসেল। মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা স্ট্রবেরির চারাগুলোতে ইতিমধ্যে ফুল আসতে শুরু করেছে। চোরের উপদ্রব থেকে বাঁচতে খেতে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পানি সেচের জন্য বসানো হয়েছে সাবমার্সিবল। তিন বিঘা জমিতে দুটি প্রজেক্ট তৈরি করেছেন রাসেল। আরআইএম ডিগ্রি কলেজের পশ্চিম পাশে অবস্থিত একটি প্রজেক্টে পলি নেট হাউসের ব্যবস্থা করে দিয়েছে উপজেলা কৃষি কার্যালয়। সেখানে স্ট্রবেরির চারা উৎপাদনের কাজ করেন রাসেল নিজেই।
উদ্যোক্তা রোকনুজ্জামান রাসেল বলেন, ‘আমি আগে থেকেই নার্সারির কাজ করতাম। সেই সুবাদে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে স্ট্রবেরি চারা এনে চাষ শুরু করি গত বছর। পরীক্ষামূলক এ চাষে গেল বছর খরচা বাদে দুই থেকে আগাই লাখ টাকা আয় হয়েছে। তাই এ বছর জমি বাড়িয়ে তিন বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল চার জাতের চারা রোপণ করেছি।’
রাসেল বলেন, ‘তিন বিঘা জমিতে মোট ১৫ হাজার চারা রোপণ করেছি। সব মিলিয়ে বিঘা প্রতি দুই লাখ টাকার মতো খরচা হবে। গত বছর রাজশাহীর ল্যাব থেকে আনা রাবি-৩ জাতের স্ট্রবেরির চারা এবার আমি নিজেই উৎপাদন করেছি। এ ছাড়াও আমেরিকার ফেস্টিভ্যাল, থাই ও উইন্টার ডন নামের উচ্চ ফলনশীল চারাও রোপণ করেছি এবার।’
তিনি বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর অধিক লাভের আশা করছি। কলেজ শেষে জমিতে আমি নিজে পরিচর্যার কাজ করি। পাশাপাশি দু-তিনজন কাজের লোক রেখেছি। তারা প্রতিনিয়ত স্ট্রবেরি গাছের পরিচর্যা করছেন।’
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে স্ট্রবেরির চারা রোপণের জন্য জমিতে শেড তৈরি করা হয়। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে চারা রোপণ শুরু হয়ে চলে ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর জানুয়ারির শেষের দিকে ফুল ও ফল ধরা শুরু করে। বৃষ্টির মৌসুম আসা পর্যন্ত ফল দিতে থাকে স্ট্রবেরির গাছ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাসেল সাহেব গত বছর পরীক্ষামূলক স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেছিলেন। তিনি সফলও হয়েছেন। আমরা তাঁকে একটি পলি নেট হাউসের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সেখানে বৃষ্টির সময়ও স্ট্রবেরি চাষ করতে পারবেন তিনি।’
শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কৃষি কার্যালয় থেকে তাঁকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করব। খুব দ্রুত রাসেলের স্ট্রবেরির প্রজেক্টটি পরিদর্শন করব।’