বকেয়া বিল ছাড় করাতে রাজশাহীর পবা ডাঙ্গেরহাট মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আসলাম আলীকে ফোন করে ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার ঘটনাটি ঘটলেও আজ (মঙ্গলবার) বিষয়টি জানাজানি হয়েছে। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কেউ, নাকি অন্য কেউ ফোন করেছিল সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জানা গেছে, অপরিচিত এক নারী কলেজ অধ্যক্ষকে ফোন করেন। তবে ওই নারী তাঁর নাম-পরিচয় জানাননি। শুধু বলেছেন, ‘মাউশি থেকে বলছি।’ অধ্যক্ষকে ওই নারী বলেন, ‘দ্রুত ফাইলটার কাজ করাতে কিছু টাকা দিতে হবে।’
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজটির অন্তত সাত মাসের বকেয়া বিল আটকে রয়েছে। ৪৩ জন শিক্ষক-কর্মচারীর পাওনা প্রায় ৯০ লাখ টাকা। বিলের এই ফাইল আছে মাউশি রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালক (ডিডি) ড. মো. আলমগীর কবীরের টেবিলে। ৬ জানুয়ারির মধ্যে সব ফাইলের কাজ শেষ করার কথা।
টাকা চাওয়ার ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষসহ কয়েকজন গতকাল মাউশির রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মোহা. আছাদুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করেন। এভাবে টাকা চাওয়ার বিষয়টি তাঁকে জানান। তাঁরা পরিচালককে মোবাইল নম্বরটিও দিয়েছেন। তবে ওই নম্বরে কল দিয়ে দেখা গেছে সেটি বন্ধ। পরিচালক এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে মাউশির রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মোহা. আছাদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কে ফোন করেছিল তা তো আমি নিশ্চিত নই। মোবাইল নম্বরটিও চিনতে পারছি না। তাই অধ্যক্ষকে বলেছি, তিনি যেন থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশই তাহলে খুঁজে বের করবে।’
অধ্যক্ষ আসলাম আলী জানান, মাউশির রাজশাহী অঞ্চল থেকে এ ফাইল ঢাকায় যাবে। তারপর টাকা পাওয়া যাবে। রাজশাহী অঞ্চল ফাইলের ভেরিফিকেশন করে থাকে। কোনো কারণে নেগেটিভ রিপোর্ট দিলে আর টাকা পাওয়া যাবে না। এখন এ ঘটনার পর তিনি দুশ্চিন্তায় আছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, ‘একটা মেয়ে মানুষ ফোন করেছিল। সে বলল, আপনার ফাইলটা আছে। কাজটা করতে টাকা লাগে। দ্রুত করে নিতে হলে টাকা দিতে হবে। আমি বললাম, টাকা দিয়ে কোনো কাজ করাব না।’
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘যিনি ফোন করেছিলেন, তিনি তাঁর নাম বলেননি।’ বলেছিলেন, ‘মাউশি থেকে বলছি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডাঙ্গেরহাট কলেজের এই ফাইলটি মাউশির ডিডি (কলেজ) ড. মো. আলমগীর কবীরের টেবিলে রয়েছে। তাঁর পক্ষে কেউ ফোন করেছিলেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এটা বলতেই পারব না। আমি তো এ বিষয়ে এখনো কিছু শুনিনি। আপনাদের (সাংবাদিকদের) এসব কে বলে’,
পাল্টা প্রশ্ন করে ড. আলমগীর কবীর বলেন, ‘ফাইল তো আটকে নেই। এটা চলমান প্রক্রিয়া। আগামী ৬ তারিখের মধ্যে ফাইলের কাজ করতে হবে। এখনো আমার টেবিলে ৫০টা ফাইল আছে। ৬ তারিখ পার হলে না হয় বলা যেত আটকে রয়েছে।’