গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে তিন সাঁওতাল হত্যার ঘটনায় ‘মূল হোতা’ সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। আজ শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (গানাসাস) সামনে আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আয়োজনে এ কর্মসূচি হয়।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে তির-ধনুক, বাদ্যযন্ত্রসহ বিভিন্ন দাবিসংবলিত ফেস্টুনসহ অংশ নেন সাঁওতাল নারী-পুরুষেরা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর থমাস হেমব্রম বাদী হয়ে তৎকালীন স্থানীয় এমপি আবুল কালাম আজাদসহ ৩৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। কিন্তু বিচার হওয়া তো দূরের কথা, মামলার আসামি সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বুলবুল আকন্দসহ অন্য মূল আসামিদের কেউই গ্রেপ্তার হননি। এ ছাড়া সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ইক্ষু খামারের সাঁওতালদের বসবাস করা ১ হাজার ৮৪২ একর পৈতৃক সম্পত্তি ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি।’
বক্তারা আরও বলেন, অতিসম্প্রতি রাজাহার ইউনিয়নের রাজাবিরাট এলাকায় আদিবাসী সাঁওতাল পল্লির ব্রিটিশ সরেনের বাড়িতে ভূমিদস্যু রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় রফিকুল চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার হলেও অন্য দুর্বৃত্তরা এখনো গ্রেপ্তার হননি। অবিলম্বে দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার ও বিচার করতে হবে।
পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ওয়াজিউর রহমান রাফেল, আইনজীবী মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রজতকান্তি বর্মণ, জন-উদ্যোগের সদস্যসচিব প্রবীর চক্রবর্তী, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, সদর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী মুসা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমি উচ্ছেদে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে তিন সাঁওতাল নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হন।