রংপুরের পীরগঞ্জে মাকে হত্যার দেড় মাস আগে পাঁচ বছরের কন্যাকে হত্যা করে পুঁতে রাখার ঘটনায় অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় তাঁরা ফাঁসির দাবি জানান।
আজ রোববার সকালে শিশু সায়মার লাশ উদ্ধারের পর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। অভিযুক্ত আতিকুল ইসলাম (৩৫) পীরগঞ্জের চতরা ইউনিয়নের বড় বদনাপাড়ার বাসিন্দা। নিহত নারীর নাম দেলোয়ারা বেগম (৩০)।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চতরা ইউনিয়নের বড় বদনাপাড়া গ্রামের পাশে মরিচখেত থেকে নারীর মাথাহীন লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ নিশ্চিত হয়, হত্যার শিকার দেলোয়ারা বেগম নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বাসিন্দা। তাঁর বিয়ে হয়েছিল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে। পরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়েছে। দোলোয়ারার সঙ্গে বদনাপাড়া গ্রামের আতিকুল ইসলামের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তাঁরা দুজন গ্রামগঞ্জে গানবাজনা করে বেড়াতেন।
পুলিশ আরও জানায়, এ ঘটনায় পুলিশ আতিকুল ইসলামকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে । শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, উপজেলার করতোয়া নদীর টোংরারদহ থেকে দেলোয়ারা বেগমের খণ্ডিত মাথা মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করে পুলিশ।
এরপর দেলোয়ারা বেগমের তালাকপ্রাপ্ত স্বামী পুলিশকে জানান, তাঁর সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ বছরের মেয়ে সায়মাও ছিল। পুলিশ আজ সকালে অভিযুক্ত আতিকুলের বাড়ির পেছন থেকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের বাগানে পুঁতে রাখা শিশু সাইমার লাশ উদ্ধার করে। এর পরপরই আতিকুলের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
পীরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের লিডার মোকলেছুর রহমান বলেন, ৯টা ৫০ মিনিটে বড় বদনাপাড়ায় আগুনের খবর পাই। সেখানে গিয়ে দেখি টিনশেড তিন-চারটি ঘরে আগুন জ্বলছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, আতিকুল ইসলামের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শুক্রবার ওই নারীর মাথা উদ্ধার করা হয়। রাতে জিজ্ঞাসাবাদে দোলোয়ারা বেগমের শিশুকন্যাকে দেড় মাস আগে হত্যা করে পুঁতে রাখার কথা স্বীকার করেন তিনি। আজ আতিকুলের বাড়ির পাশের সুপারি বাগান থেকে শিশু সায়মার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শুনেছি বিক্ষুব্ধ জনতা আতিকুল ইসলামের বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। আদালতে একটা শুনানিতে আছি, ঘটনাস্থলে যেতে পারিনি।