হোম > সারা দেশ > সিলেট

ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন মণিপুরি তাঁতশিল্পীরা

বিকুল চক্রবর্তী, মৌলভীবাজার

ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌলভীবাজারের মণিপুরি তাঁতশিল্পীরা। জেলার শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার মণিপুরি এলাকায় ঘরে ঘরে নারীরা হাতে বুনছেন শাড়ি। 

জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলা মণিপুরি তাঁতশিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ। প্রতিদিন এখানে বেড়াতে আসা শত শত পর্যটকের কাছে আকর্ষণীয় মণিপুরি তাঁতের শাড়ি, থ্রিপিস, চাঁদর, পাঞ্জাবিসহ রকমারি পোশাক। 

শুধু তাই নয়, অনলাইনে ব্যবসায়ীরাও এখান থেকেই তা সংগ্রহ করেন। বিশেষ করে ঈদ ও পূজা-পার্বণে এসব পোশাকের চাহিদা বেড়ে যায়। কিছুদিন পরেই আসছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে মণিপুরি তাঁতপল্লির বুননশিল্পীদের। 

মণিপুরি একেকটা ঘর মানেই একেকটি তাঁতশিল্পের কারখানা। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন জেলার দুই উপজেলার কয়েক হাজার মণিপুরি সম্প্রদায়ের লোক। বিশেষ করে মণিপুরি নারীরা কাপড় বোনেন এবং পুরুষেরা বিপণন ও কাঁচামালের জোগাড় করেন। 

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের রামনগর মণিপুরিপাড়া, টিকরিয়া মণিপুরিপাড়া, কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর, আদমপুর, তেতইগাঁও, ঘোড়ামারা, তিলকপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে মণিপুরি সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস। এসব এলাকায় একসময় শতকরা ৯০ শতাংশ পরিবারেই মণিপুরি তাঁত ছিল। বর্তমানে বিকল্প জীবিকা ও পুঁজির অভাবে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পরিবার এই পেশা থেকে সরে এসেছে। 

শ্রীমঙ্গলের রামনগর মণিপুরিপাড়ার তাঁতশিল্পী সবিতা সিনহা বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর আমাদের ব্যবসা হয়নি। শাড়ি তৈরি করলেও ক্রেতা আসেননি। ঘরে দুই-তিনটি তৈরি শাড়ি রেখে অনেকের নতুন করে আর শাড়ি বোনা হয়নি। এক কথায় বলা চলে, আমাদের এ পেশায় একটা ধস নামে। 

মণিপুরি কাপড় ব্যবসায়ী বিপুল সিংহ বলেন, করোনা মহামারির সময় সরকার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে প্রণোদনা দিয়েছে, কিন্তু আমাদের ভাগ্যে এসব জোটেনি। এদিকে বর্তমানে কাপড় বুনতে গিয়ে সুতা, রংসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

মণিপুরি কমিউনিটির নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন সিংহ বলেন, নানা প্রতিকূলতার মাঝেও ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন মণিপুরি তাঁতশিল্পের সঙ্গে জড়িত কমিউনিটির উদ্যোক্তারা। বিশেষ করে বিগত দুটি বছর ধরে করোনার কারণে অনেকটা হুমকির মুখে থেকেও যে এখনো এই শিল্প টিকে আছে তা তাঁদেরই অবদান। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, ললিতকলা একাডেমির ট্রেনিং সেন্টারগুলো বন্ধ রয়েছে। এগুলো আবার চালু করা প্রয়োজন। তা ছাড়া মাধপুরে নির্মিত আধুনিক ট্রেনিং সেন্টারে এখনো প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়নি। বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক ডিজাইনের সন্নিবেশে কাপড় তৈরি করলে এর চাহিদা বাড়বে। বিশেষ করে মণিপুরি জামদানি শাড়ি তৈরিতে আরও উদ্যোগী হওয়া যাবে। 

উদ্যোক্তা ভুবন সিংহ বলেন, এখন সরকারিভাবে বিনা সুদে প্রণোদনা কিংবা আর্থিক সহযোগিতা জরুরি। তা না হলে নিজস্ব উদ্যোগে তাঁতশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। 

মণিপুরি কমিউনিটির নারী নেত্রী জয়া শর্মা বলেন, একটু সহযোগিতা পেলেই এই শিল্প দিয়েই এখানকার মানুষগুলো বেঁচে থাকতে পারবে। তেমনি সরকারও পাবে রাজস্ব। 

জয়া শর্মা আরও বলেন, একটি সাধারণ শাড়ির কাঁচামাল সংগ্রহে খরচ পড়ে ১ হাজার টাকা। আর উন্নত সুতা দিয়ে তৈরি করলে সেই খরচ পড়বে ২ হাজার টাকারও অধিক। আর মণিপুরি জামদানি তৈরি করলে তার খরচ পড়ে প্রায় ৪ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, এই অঞ্চলে মণিপুরি তাঁতশিল্পের ব্যাপক প্রসার রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এর চাহিদা রয়েছে। এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে কমলগঞ্জে প্রশিক্ষণ সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। 

সিলেটে বিপুল পরিমাণে চোরাচালানের মালামাল জব্দ

সিলেটে ৪০০ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ ট্রাকচালক আটক

দেশে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ২ ভারতীয় নাগরিক আটক

‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে মামলা-বাণিজ্য

কমলগঞ্জে পাহাড়ি ছড়ায় যুবকের লাশ, শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন

পা পড়ে না চার সেতুতে

এক মাসেও মাটি পড়েনি ফসল রক্ষা বাঁধে

শতাধিক পণ্যে ও সেবায় ভ্যাট বাড়ানোর প্রতিবাদে সিলেটে মশাল মিছিল

হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টিকারী কেউ যেন আমাদের মাথার ওপর না বসে: ফুলতলীর পীর

গোয়াহরি বিলে পলো বাওয়া উৎসবে মানুষের ঢল

সেকশন