বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও পরিবেশ আন্দোলনকে গুরুত্ব দিয়ে এবং বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে নিজ গ্রামে ৫০০ তালবীজ রোপণ করলেন পরিবেশ, ভ্রমণ ও অ্যাভিয়েশন-বিষয়ক কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম। নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার দশানী টবগা গ্রামে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দুই দিনব্যাপী তালবীজ রোপণ কার্যক্রম গতকাল শনিবার শেষ হয়। এই কার্যক্রম সম্পাদনে সহযোগী হিসেবে ছিল মিশন গ্রিন বাংলাদেশ।
তালবীজ রোপণের উদ্যোক্তা পরিবেশকর্মী ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম বলেন, ‘আমাদের দেশে বর্তমান সময়ে বজ্রপাতে মারা যাওয়ার সংখ্যা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। মানুষের পাশাপাশি প্রতিবছর অনেক গবাদিপশুও মারা যায় এই বজ্রপাতে। তালগাছ এসব দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে পারে বলে এমন উদ্যোগ নিয়েছি।’
আশরাফুল আলম আরও বলেন, ‘আমাদের মতো আপনারাও তালের সময়ে তাল খেয়ে সেই বীজ বসতভিটার আশপাশে অথবা রাস্তার ধারে রোপণ করুন কিংবা সেই বীজ তুলে দিন আমাদের হাতে। আসুন প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় ও বজ্রপাত থেকে বাঁচতে তালের বীজ রোপণ করি এবং নিজ চারপাশকে আরও একটু সবুজ করি।’
তালবীজ রোপণ করা প্রসঙ্গে মিশন গ্রিন বাংলাদেশের আহ্বায়ক আহসান রনি বলেন, ‘সারা দেশকে আমরা সবুজ করতে চাই। দেশ সবুজ হলে অনেকাংশে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিই শুধু কমবে না, আমাদের দেশ ফিরে পাবে তার হারানো রূপ। আমরা ফিরে পাব সবুজ, শ্যামল বাংলাদেশ। এ ছাড়া আমরা বুকভরে নিতে পারব নির্মল বাতাস।’
গ্রামের বাসিন্দা ও সরল অঙ্ক বইয়ের লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌস অনি রাস্তার দুই ধারে তালবীজ লাগানো প্রসঙ্গে বলেন, ‘মাটির ক্ষয়রোধ, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি ঘরের খুঁটি ও হাতপাখা তৈরিতে তালগাছের ব্যবহার হয়ে আসছে শত বছর ধরে। তালপাতার পাখা আমাদের বাঙালি জাতির ঐতিহ্যের একটি অংশ। তালগাছের ডালের আঁশ থেকে রকমারি দ্রব্যাদি প্রস্তুত হয়। তিনি আরও বলেন, ‘তালগাছের সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। তাই আমাদের প্রচুর পরিমাণে তালবীজ রোপণ করতে হবে, যাতে করে প্রকৃতি ঠিক থাকে।’