চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মহাডাঙা এলাকার সুমন আলীকে ইতালি পাঠানোর জন্য দেড় বছর আগে দুই লাখ টাকা ও পাসপোর্ট নেন ইউসুফ আলী। সেই পাসপোর্ট আব্দুল লতিফ নবীনকে দেন ইউসুফ। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভিসা পাননি সুমন। এমনকি ফেরত পাননি টাকা ও পাসপোর্ট।
শুধু সুমন নয়, শহরের মণ্ডলপাড়ার শাহরিয়ার আড়াই বছর আগে রোমানিয়ায় যাওয়ার জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেন। তিনিও ভিসা কিংবা টাকা ফেরত না পেয়ে আছেন অনিশ্চয়তায়। এমনই অনিশ্চয়তায় আছেন ভাবানীপুরের নাহিদ, আমিনুলসহ তিন শতাধিক যুবক।
ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের ধাপাপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলী ও পৌরসভার শংকরবাটি তেনু মণ্ডলপাড়ার আব্দুল লতিব নবীন বছর পাঁচেক আগে যৌথ মালিকানায় মাহিয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। শহরের শান্তি মোড়ে দেন অফিস। সেখানে বসে ইতালি, সুইডেন, সাইপ্রাস, রোমানিয়াসহ বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর নামে শুরু করেন প্রতারণা। এদিকে সাড়ে ৩ বছর আগে নবীন রাজারামপুরে পাসপোর্ট অফিসের সামনে নওশিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস নামে নতুন অফিস নেন। এই দুই প্রতিষ্ঠান মিলে প্রতারণা করে পাঁচ কোটির বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
পরে টাকা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয় নবীন ও ইউসুফের মধ্যে। সমাধানের জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে গত ২৩ সেপ্টেম্বর একটি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী নবীন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার তিনটি চেক দেন ইউসুফকে। কিন্তু কোনো ভুক্তভোগী টাকা ফেরত পাননি।
ব্যাংক চেক ও চুক্তির কপি সংগ্রহ করেছে আজকের পত্রিকা। এতে দেখা যায়, চুক্তিতে নবীন স্বীকার করেছেন, রোমানিয়া ও সুইডেন পাঠানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় ২৫০টি পাসপোর্ট ও নগদ ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা নিয়েছেন। চুক্তি মোতাবেক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিদেশ পাঠাতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁদের মধ্যে একটি বিরোধ সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী শাহরিয়ার বলেন, ‘রোমানিয়া যাওয়ার জন্য আড়াই বছর আগে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও পাসপোর্ট দিয়েছি ইউসুফকে। এসব পাসপোর্ট ও টাকা তিনি নবীন নামের আরেক দালালকে দিয়েছেন। ভিসা দেওয়ার জন্য ৩০ বার সময় নিয়েও বিদেশ পাঠাতে পারেননি। টাকাও ফেরত দেননি।’
অভিযোগের বিষয়ে ইউসুফ আলী বলেন, ‘আমি নবীনকে পাসপোর্ট আর টাকা দিয়ে বিপদে পড়েছি। ৩ অক্টোবর নবীনের আমাকে ২৫০টি পাসপোর্ট আর ২ কোটি ৪০ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাসপোর্ট আর টাকা দেয়নি।