Ajker Patrika
হোম > স্বাস্থ্য

হার্ট অ্যাটাক হওয়ার মুহূর্তে কী করবেন

আলমগীর আলম

হার্ট অ্যাটাক হওয়ার মুহূর্তে কী করবেন

হার্ট অ্যাটাককে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বা এমআই বলা হয়। এটি যখন হয় তখন হৃৎপিণ্ডের কোনো অংশে রক্ত সরবরাহ সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এটি সাধারণত ঘটে করোনারি ধমনিতে বাধা বা সংকীর্ণতার কারণে। করোনারি ধমনি হলো এমন রক্তনালি যা হৃৎপিণ্ডের পেশিতে অক্সিজেন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ রক্ত সরবরাহ করে।

প্রশ্ন হলো, হার্ট অ্যাটাকের কারণগুলো কী কী?

প্রধান কারণ: করোনারি ধমনিতে ব্লকেজ

হার্ট অ্যাটাকের বড় কারণ হলো করোনারি আর্টারি ডিজিজ বা সিএডি। এই রোগে করোনারি ধমনির ভেতরে প্লাক নামে ফ্যাটি ডিপোজিট জমা হয়। এই প্লাক কোলেস্টেরল, ফ্যাট, ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য পদার্থ দিয়ে তৈরি। এর ফলে,

ধমনি সংকুচিত হয়: প্লাক জমার কারণে ধমনি সংকুচিত হয়ে যায়। ফলে হৃৎপিণ্ডে পর্যাপ্ত রক্ত ও অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না।

প্লাক ফেটে যায়: যদি প্লাক ফেটে যায়, তাহলে রক্ত জমাট বেঁধে (থ্রম্বাস) ধমনি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে পারে। এটিই হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ।

হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পূর্ব লক্ষণগুলো জানা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এগুলো সময়মতো চিনতে পারলে চিকিৎসা নিয়ে জীবন বাঁচানো সম্ভব।

প্রধান পূর্ব লক্ষণ

  • বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি, এটি হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ।
  • বুকের মাঝখানে বা বাম দিকে চাপ, ভারী ভাব, জ্বালাপোড়া বা ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
  • ব্যথা কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে বা আসা-যাওয়া করতে পারে।
  • কখনো এই ব্যথা গলা, চোয়াল, কাঁধ, বাহু (বিশেষ করে বাম বাহু), পিঠ বা পেটে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
  • শ্বাসকষ্ট, হঠাৎ শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া বা দম আটকে আসার অনুভূতি।
  • অতিরিক্ত ঘাম, ঠান্ডা ঘাম হওয়া, বিশেষ করে বুকের ব্যথা বা শ্বাসকষ্টের সঙ্গে।
  • অস্বাভাবিক ক্লান্তি, হঠাৎ অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা, যা কয়েক দিন ধরে থাকতে পারে।
  • তবে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো সব সময় স্পষ্ট নাও হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এটি ‘সাইলেন্ট’ হতে পারে। অর্থাৎ কোনো লক্ষণ ছাড়াই ঘটতে পারে। এটি বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

মাইয়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বা হার্ট অ্যাটাকের মুহূর্তে কিছু প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। তাতে সাময়িক স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে। বড় কথা এসব কাজ চিকিৎসা শুরু করার জন্য কিছুটা বেশি সময় পাওয়ার সুযোগ করে দিতে পারে। তবে এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, এগুলো কোনো চিকিৎসা নয় কিংবা চিকিৎসার বিকল্পও নয়। হার্ট অ্যাটাক একটি জরুরি চিকিৎসা অবস্থা। এর জন্য অবিলম্বে চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া জরুরি। তাতে প্রাণহানির আশঙ্কা কমে। প্রাকৃতিক উপায়ে যা করতে পারেন,

আদা চিবিয়ে খাওয়া: আদায় থাকা জিঞ্জেরাল নামে উপাদান পেট ফাঁপা কমায়, যা ওই সময় খুব জরুরি। তাতে স্বস্তি পাওয়া যায়, বুকে চাপ কমে।

অ্যাসপিরিন চিবানো: যদি হাতের কাছে অ্যাসপিরিন থাকে এবং আপনার চিকিৎসক সেটি নিষিদ্ধ না করে থাকেন, তাহলে একটি অ্যাসপিরিন (সাধারণত ৩২৫ মিলিগ্রাম) চিবিয়ে খেতে পারেন। অ্যাসপিরিন রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করতে সাহায্য করে এবং ধমনির ব্লকেজ কমাতে পারে। এ কাজ হার্ট অ্যাটাকের সময় রক্ত প্রবাহ উন্নত করতে সহায়ক হতে পারে।

শান্ত থাকা এবং বিশ্রাম নেওয়া: হার্ট অ্যাটাকের সময় উদ্বেগ বা আতঙ্ক পরিস্থিতি আরও খারাপ অবস্থা তৈরি করতে পারে। তাই হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বুঝলে শান্ত থাকার চেষ্টা করুন এবং যতটা সম্ভব বিশ্রাম নিন। বসে বা শুয়ে থাকুন যাতে হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ কম পড়ে।

গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস: ধীরে ধীরে নাক দিয়ে গভীর শ্বাস নিন এবং মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। এই প্রক্রিয়া কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করলে উদ্বেগ কমতে পারে এবং শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়তে পারে, যা কিছুটা হলেও হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করতে পারে।

হৃৎপিণ্ড ভালো থাকুক, এটি অ্যাটাক হওয়ার আগেই চিন্তা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ভাবেই অবহেলা বা বেখেয়াল হওয়া যাবে না।

আলমগীর আলম, খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ প্রধান ‍নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

হার্ট অ্যাটাক থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়

ডায়াবেটিস রোগীদের চোখের যত্নে করণীয়

ঈদে হৃদ্‌রোগীর খাবার কেমন হবে

উৎসবে স্বাদ হোক স্বাস্থ্যকর

ডায়ালাইসিসের ব্লাড লাইনের সংকট, দাম আকাশচুম্বী

তামিমের ধূমপানের তথ্য প্রকাশ চিকিৎসকের ‘পেশাগত নৈতিকতা’ লঙ্ঘন

দেশে আবারও বার্ড ফ্লু শনাক্ত, দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান

যৌন সক্ষমতা অক্ষুণ্ন রেখেই সম্ভব প্রোস্টেট ক্যানসারের অস্ত্রোপচার: গবেষণা

স্তন্যপায়ীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছে বার্ড ফ্লু, বাড়ছে নতুন মহামারির আশঙ্কা

চিকিৎসায় বড় সমস্যা এমডিআর যক্ষ্মা