হোম > স্বাস্থ্য > চিকিৎসকের পরামর্শ

বুকের মধ্যে শ্বাসনালিতে ক্যানসার হলে

অধ্যাপক ডা. মো. শামসুল আলম

মানুষের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা বুক। আর এই বুকের মধ্যকার ব্রংকাস, ফুসফুস, দুটি ফুসফুসের মাঝের অংশ বা মিডিয়াস্টিনাম প্রভৃতি জায়গায় ক্যানসার হয়ে থাকে। আবার স্তন, কিডনি, জরায়ু, ওভারি, টেসটিস, থাইরয়েড প্রভৃতির ক্যানসারও ফুসফুসে ছড়ায়। বুকের মধ্যে শ্বাসনালি বা ব্রংকাসের ক্যানসার মারাত্মক বিপদের কারণ। তাই রোগটি সম্পর্কে ধারণা নেওয়া, সঠিক সময়ে চিকিৎসা নেওয়া ও বুকে ব্যথা বা শক্ত কিছু অনুভূত হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

শ্বাসনালির ক্যানসার কাদের বেশি হয়
শ্বাসনালির ক্যানসারে আক্রান্তদের শতকরা ৪০ ভাগ পুরুষ। গবেষণায় দেখা যায়, শ্বাসনালির ক্যানসারে আক্রান্ত নারীদের সংখ্যা পুরুষের প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ হতে পারে। এই ক্যানসার ৪৫ থেকে ৭৫ বছর বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। শ্বাসনালির ক্যানসারের একটি প্রধান কারণ ধূমপান। যে যত বেশি ধূমপান করে, তার এই রোগের প্রবণতা তত বেশি। শুরুতে সঠিক চিকিৎসা না হলে অল্প দিনেই রোগীর মৃত্যু হয়ে থাকে। 

লক্ষণ

  • কাশি একটি সাধারণ লক্ষণ বা উপসর্গ। এ ছাড়া অন্য লক্ষণ তেমন বোঝা যায় না।
  • জীবাণু সংক্রমণের পরিমাপের ওপর কফের বৈশিষ্ট্য নির্ভর করে।
  • কফের সঙ্গে সামান্য রক্ত উঠতে দেখা যায়।
  • ফুসফুসের কোনো খণ্ডে সমস্যা হলে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানির ভাব প্রভৃতি প্রকাশ পায়।
  • অনেক সময় নিউমোনিয়ার লক্ষণ এবং ফুসফুসের পর্দায় ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
  • প্লুরাতে টিউমারের আক্রমণ ঘটলে প্লুরার পর্দায় পানি জমে এবং তার সঙ্গে প্রচুর রক্ত মিশ্রিত থাকে।
  • অনেক সময় হাতেও ব্যথা দেখা দেয়।
  • রোগ বাড়লে রোগীর মনের পরিবর্তন, প্রস্রাবে রক্ত, ত্বকে নডিউল দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া স্নায়ু আক্রান্ত হয়ে দেহের নানা স্থানের স্নায়ুবিক অক্ষমতা ও তার জন্য বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে।

বুকের লক্ষণ

  • শুরুতে বুকে কোনো লক্ষণ দেখা বা বোঝা যায় না। এটি ব্রংকাইটিস বলে মনে হতে পারে প্রায় ক্ষেত্রেই।
  • ব্রংকাসে বাধার সৃষ্টি হলে পালমোনারির কার্যক্রম নষ্ট হওয়ার লক্ষণ চোখে পড়ে।
  • টিউমার খুব বড় হলে তখন প্লুরাল ইফিউশন দেখা দেয়।
  • প্লুরাতে ছড়িয়ে পড়লে ড্রাই বা শুকনা অথবা ইফিউশনযুক্ত প্লুরিসি দেখা যায়।

রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা
এক্সরে

বিভিন্ন অবস্থা অনুযায়ী লক্ষণ জানার জন্য এটি করতে হয়। কোনো অংশের ঘন, গাঢ় ওপাসিটি বা দাগ দেখা দিতে পারে। ফুসফুসের দাগের সঙ্গে ছোট ছোট গর্ত দেখা দিতে পারে। ফুসফুসের বিরাট অংশ বা একটি গোটা ফুসফুস চুপসে গেলে বড় অংশজুড়ে এটি দেখা দেয়। অনেক সময় ফুসফুসের পর্দায় পানি জমতে পারে, যাকে প্লুরাল ইফিউশন বলে।

ব্রংকোসকোপি
এর দ্বারা শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে ফুসফুসের টিস্যু কিছুটা বের করে এনে হিস্টোলজিক্যাল পরীক্ষা করা সম্ভব হয়। এর সাহায্যে সার্জিক্যাল চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে সুবিধা হয়। মাঝবয়সী এবং বয়স্ক লোকদের ক্ষেত্রে এ রোগ বেশি হয়ে থাকে।

চিকিৎসা
অপারেশন পদ্ধতির দ্বারা বুকের মধ্যে ফুসফুস বা তার একটি খণ্ড কেটে বাদ দিতে হয়। প্রথম অবস্থায় রোগ ধরা পড়লে এরূপ করা সম্ভব হয়। এভাবে দ্রুত চিকিৎসা করা হলে শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ রোগী ৫ বছর বা তার বেশিও বেঁচে থাকতে পারে। 

খুব ছোট টিউমার সবেমাত্র শুরু হলে ডিপ এক্সরে দিয়ে সারানো সম্ভব হয়। তবে অনেক সময় আবার তা শুরু হয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে জটিল অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে। অনেক সময় কোমোথেরাপি দিয়ে তারপর ডিপ এক্সরে চিকিৎসা করা হয়। তবে টিউমার ছোট ও প্রাথমিক অবস্থাতে ধরা পড়লেই কেবল তাতে অনেকটা সুফল মিলে বা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

লেখক: বক্ষব্যাধি, হৃদরোগ, রক্ত, খাদ্যনালী বিশেষজ্ঞ ও সার্জন সিনিয়র কনসালট্যান্ট এবং হেড অব ডিপার্টমেন্ট ইউনাইটেড হাসপাতাল গুলশান-২, ঢাকা এবং
সাবেক অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, জাতীয় বক্ষব্যাধী হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা

গর্ভাবস্থায় মেথি খাওয়া যায়

কাঁধ নাড়াচাড়া করতে না পারলে

ওজন কমাতে ডায়েট কেমন হবে

স্ক্যাবিস বা চুলকানি রোগের প্রতিকার ও চিকিৎসা

শারীরিক ভঙ্গিজনিত কোমর ব্যথা এড়াতে যা করতে হবে

চোখেও হতে পারে ক্যানসার

চোখে মাংস বেড়ে গেলে

এই শীতে কানের সমস্যা প্রতিরোধে যা করবেন

হ্যান্ড, ফুট ও মাউথ রোগে ভয়ের কারণ নেই

রক্তনালিতে টক্সিন জমলে যা করবেন

সেকশন