পিউবারফনিয়া মূলত একটি কণ্ঠস্বরের রোগ। এটি অস্বাভাবিক কণ্ঠস্বর হিসেবেও পরিচিত। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে বা মেয়ে উভয়ের কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন হয়ে থাকে। যখন এ স্বরের পরিবর্তন স্বাভাবিক শারীরিক পরিপক্বতার পরে আর সঞ্চারিত না হয়, তখন ওই ব্যক্তির কণ্ঠস্বর অস্বাভাবিক হয়ে যায়। এটি সাধারণত ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হয়। ছেলেদের স্বর সাধারণত মেয়েদের মতো এবং মেয়েদের কণ্ঠস্বর শিশুদের মতোই থেকে যায়।
লক্ষণ
কারণ
সাধারণত পিউবারফনিয়া রোগীদের শারীরবৃত্তীয় কোনো অস্বাভাবিকতা লক্ষ করা যায় না। তবে, মানসিক কারণের ফলে বা আবেগময় কারণে এ রোগ হতে পারে। বর্তমান গবেষকেরা মনে করেন যে, কণ্ঠস্বর নিয়ন্ত্রণ করার প্রচেষ্টাও পিউবারফনিয়ার একটি কারণ হতে পারে। বয়ঃসন্ধিকালে যখন কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন ঘটে, তখন অস্বস্তি বোধ থেকে অনেকেই আগের কণ্ঠ ধরে রাখতে চায়। আবার শিশু সুলভ কণ্ঠকে সামাজিকভাবে ‘অপরিপক্ব’ মনে করা হয়। তা ছাড়া কণ্ঠস্বরের অনুপযুক্ত ব্যবহার থেকে এটি হতে পারে। অনেক সময় গলার যে অংশ হতে স্বর বের হয় অর্থাৎ ভোকাল ফোল্ডের চারপাশের মাংসপেশির টানের কারণে পিউবারফনিয়া দেখা দিতে পারে।
প্রাদুর্ভাব
সাধারণত মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়। কারণ, ল্যারেনজিয়াল বৃদ্ধি সাধারণত ছেলেদের মধ্যে ঘটতে দেখা যায়। বাংলাদেশে পিউবারফনিয়ার প্রাদুর্ভাব নিয়ে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো গবেষণার তথ্য পাওয়া যায়নি।
ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির পেশা, পরিবেশ, পরিবারের সদস্য এবং সামগ্রিক ব্যক্তিত্ব- সবকিছুর ওপর এ রোগের প্রভাব ব্যাপকভাবে দেখা যায়। পিউবারফনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে মানসিক, সামাজিক, পেশাদারি সম্পর্কসহ সব ক্ষেত্রে অসুবিধা ভোগ করতে হয়।
চিকিৎসা
পিউবারফনিয়ার চিকিৎসায় স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্ট সাধারণভাবে অন্যতম ভূমিকা পালন করেন। একজন দক্ষ স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্ট ভয়েস থেরাপি প্রদান করে থাকেন। ভোকাল কর্ড অনুশীলনের মাধ্যমে একজন থেরাপিস্ট এই সেবা প্রদান করে থাকেন। সাধারণত ১-২ সপ্তাহ এই চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করলে রোগীর সমস্যা সমাধান হয়ে থাকে।
লেখক: ইন্টার্ন স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্ট, বিএইচপিআই সিআরপি