গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় হামাসের শীর্ষ নেতা সালাহ আল-বারদাওয়েল ও তাঁর স্ত্রী নিহত হয়েছেন। হামাসের দেওয়া বিবৃতি থেকে জানা গেছে, আল-বারদাওয়েল হামাসের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগ্রহণকারী নেতা ছিলেন। তিনি ২০০৯ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় হামাসের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের বরাতে জানিয়েছে, গত ১৮ মাসের যুদ্ধে গাজায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
দুই মাসের আপেক্ষিক শান্তি চুক্তির পর ইসরায়েল আবার গাজায় পূর্ণাঙ্গভাবে বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে। আজ রোববার সকালে গাজা উপত্যকার উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েলি বিমানগুলো এসব অঞ্চলে একাধিক হামলা চালিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আজকের হামলায় রাফাহ ও খান ইউনিসে কমপক্ষে ৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে তিনজন পৌর কর্মকর্তা রয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবার বলেছেন, এই যুদ্ধের মূল লক্ষ্য হামাসের সামরিক ও শাসনকারী সত্তা নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া। তিনি বলেছেন, নতুন অভিযানের লক্ষ্য হামাসকে অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দিতে বাধ্য করা।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করে এবং ২৫০–এর বেশি মানুষকে জিম্মি করে নিয়ে যায়।
হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল গত জানুয়ারির যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে। তারা আলোচনার শুরুতে যুদ্ধ শেষ করার এবং গাজা থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করার অস্বীকৃতি জানায়। তবে হামাস বলেছে, তারা এখনো আলোচনায় ইচ্ছুক এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করছে।
ফিলিস্তিনি সিভিল ইমার্জেন্সি সার্ভিস বলছে, রাফাহতে প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় আটকা পড়েছেন। তাঁদের পাশাপাশি উদ্ধারকারী দলের সদস্যদেরও জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। ফিলিস্তিনি ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, গাজায় আবারও দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি ফিরে আসতে পারে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এক্সের এক পোস্ট লিখেছেন, খাদ্য ছাড়া গাজাবাসীকে ভয়াবহ সংকটের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। খাদ্যসহায়তা বন্ধ করা গাজার ওপর একটি সমষ্টিগত নির্যাতন।