Ajker Patrika
হোম > বিশ্ব > ভারত

বাংলাদেশ-ভারত কিডনি বাণিজ্য চক্র: অ্যাপোলোর চিকিৎসকসহ দিল্লিতে গ্রেপ্তার ৬ 

অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশ-ভারত কিডনি বাণিজ্য চক্র: অ্যাপোলোর চিকিৎসকসহ দিল্লিতে গ্রেপ্তার ৬ 

কিডনির অবৈধ কেনাবেচা ও বিপুল আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ভারত ও বাংলাদেশের একটি আন্তর্জাতিক চক্রের সন্দেহভাজন ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় পুলিশ। চক্রটির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের এক চিকিৎসকও আছেন। তাঁকে গত সপ্তাহে আটক করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

পুলিশ বলছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কিডনি বাণিজ্যে সক্রিয় এই চক্রের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত ৫০ বছর বয়সী চিকিৎসক বিজয়া কুমারী। তিনি দিল্লির নয়ডাভিত্তিক বেসরকারি ইয়াথার্থ হাসপাতালে ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ১৫-১৬টি কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন। এই চিকিৎসক ছাড়াও বাংলাদেশি আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

মামলার নথি থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, দিল্লির বিভিন্ন বড় হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের কথা বলে দালালের মাধ্যমে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসক বিজয়া কুমারী ও তার সহযোগীদের কাছে নিয়ে আসত চক্রটি। চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরের ডায়ালাইসিস সেন্টারে ঘুরে ঘুরে রোগী জোগাড় করত। যেসব রোগী আর্থিকভাবে সচ্ছল, ভারতে নিয়ে কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য গোপন চুক্তি করত তাদের সঙ্গে। এই চক্র কিডনি গ্রহীতার কাছ থেকে ২০-২৫ লাখ টাকা নিয়ে থাকে। 

ভারতীয় আইন অনুসারে কিডনিদাতা ও গ্রহীতার মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকতে হয়। আর বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চক্রটি নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের নথিও জাল করে ভুয়া আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপন করে কাগজপত্র তৈরি করত। চক্রটির সদস্যদের গ্রেপ্তারের সময় এসব জাল নথিও জব্দ করা হয়েছে। 

দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও কিডনি প্রতিস্থাপন সার্জন বিজয়া কুমারী প্রায় ১৫ বছর আগে হাসপাতালটিতে যোগ দেন কনিষ্ঠ চিকিৎসক হিসেবে। তবে তিনি বেতনভুক্ত চিকিৎসক ছিলেন না। নিয়মিত রোগী দেখার ভিত্তিতে মাইনে পেতেন। এ বিষয়ে ইয়াথার্থ হাসপাতালের অতিরিক্ত মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট সুনীল বালিয়ান বলেন, ‘বিজয়া কুমারী সেখানে ভিজিটিং কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করছিলেন। তাঁর নামে যেসব রোগী আসত, তিনি তাদের কিডনি প্রতিস্থাপন করাতেন।’ 

সুনীল বালিয়ান আরও বলেন, ‘ইয়াথার্থ হাসপাতালের কোনো রোগীর চিকিৎসার দায়িত্ব তাঁকে (বিজয়া কুমারী) দেওয়া হয়নি এবং গত তিন মাসের মধ্যে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মাত্র একটি কাজ করেছেন তিনি।’ 
 
ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের এক মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, পুলিশি ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিজয়া কুমারীকে এরই মধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে পুলিশের অপরাধ বিভাগ কিছু তথ্য চেয়েছিল, সেগুলোও পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘অন্য হাসপাতালে দেওয়া চিকিৎসার বিষয়ে তদন্ত শুরু হওয়ার পর এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ বিজয়ার এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও জানান ওই মুখপাত্র। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি রাসেল, মোহাম্মদ সুমন মিঞা ও ইফতি এবং ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রতীশ পাল লোকজনকে কিডনি বেচতে প্রলুব্ধ করে দিল্লিতে নিয়ে যেত। চক্রটি কিডনিদাতাদের ৪-৫ লাখ টাকা করে দিলেও গ্রহীতার কাছ থেকে ২৫-৩০ লাখ টাকা নিত। তাদের মধ্যে ইফতি বাদে বাকিরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছে, ‘রাজস্থান রাজ্যে কিডনি প্রতিস্থাপনের একটি চক্র ধরা পড়ার পর আমাদের কাছে খবর আসে এবং এ নিয়ে আমরা মাস তিনেক আগে কাজ শুরু করি।’ তিনি জানান, প্রতিটি কিডটি প্রতিস্থাপনে চক্রটি চিকিৎসককে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা দিত বলে জানতে পেরেছেন তাঁরা। 

ভুক্তভোগীদের একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, আল-শিফা নামের একটি মেডিকেল ট্যুরিজম কোম্পানির মাধ্যমে কিডনি দাতা ও গ্রহীতাদের থাকা, চিকিৎসা ও পরীক্ষার কাজ চালানো হতো। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। তদন্ত চলাকালে বিজয়ার সহকারী হিসেবে বিক্রম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, রাসেল যশোলা গ্রামে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করেছিলেন। সেখানে পাঁচ থেকে ছয়জন দাতা অবস্থান করছিলেন। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য তাঁদের সব ধরনের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছিল। ওই ফ্ল্যাটে তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন গ্রহীতারাও। রাসেলের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই ফ্ল্যাট থেকে মোহাম্মদ সুমন মিঞা ও মোহাম্মদ রোকন নামে তাঁর দুই সহযোগীকে আটক করা হয়। 

গ্রেপ্তারের সময় রাসেলের কক্ষ থেকে একটি ব্যাগ জব্দ করা হয়। ব্যাগের মধ্যে ৯টি পাসপোর্ট, দুটি ডায়েরি ও একটি রেজিস্টার খাতা পাওয়া যায়। জব্দ করা পাসপোর্টগুলোতে কিডনিদাতা ও গ্রহীতাদের বিবরণ আছে এবং তাদের আর্থিক লেনদেনের বিবরণী ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়েছে। 

পুলিশ বলেছে, গ্রেপ্তার রোকনের কাছ থেকে আরেকটি ব্যাগ জব্দ করা হয়। যেখানে ভিন্ন ছাপের ২০টি স্ট্যাম্প, দুটি রাবার স্ট্যাম্প প্যাড (কালি) পাওয়া গেছে। জাল নথি তৈরিতে এসব উপকরণ ব্যবহার করা হতো বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুতে ইসকন নেতার আবেদন ভারতের সুপ্রিম কোর্টে খারিজ

ভারতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইউএসএআইডির অর্থায়ন ৭৫০ মিলিয়ন ডলার

চতুর্থ দফায় আরও ১২ ভারতীয়কে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

মহাকুম্ভের পুণ্যস্নানে এসে স্বামীর পরকীয়ার বলি হলেন স্ত্রী

কেরালায় দলিত কিশোরীকে ৫ বছর ধরে ধর্ষণ করে ৬০ জন

উত্তরাখন্ডে বন সংরক্ষণের তহবিলে কেনা হয়েছে আইফোন–আসবাব

বিজেপি-আরএসএস ১৯৬০-এর দশক থেকেই মার্কিন অর্থ পাচ্ছে: কংগ্রেসের পাল্টা অভিযোগ

সার্ক পুনরুজ্জীবনে বাংলাদেশের আহ্বানের জবাবে ‘সন্ত্রাসবাদ জুজু’ দেখাল ভারত

কোটি টাকার হেরোইনসহ আটক ভারতীয় ‘লেডি ডন’ জোয়া খান

ইউএসএআইডির ২১ মিলিয়ন ডলার অনুদান বাতিল, মুখ খুলল ভারত সরকার