ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ঘোষণা করেছেন, তিনি সেনাবাহিনীকে গাজায় আরও ভূমি দখল করতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং সতর্ক করেছেন—হামাস যদি বাকি বন্দীদের মুক্ত না করে, তবে ইসরায়েল গাজার কিছু অংশ নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করবে।
আজ শুক্রবার এই ঘোষণা দেওয়ার আগে গত মঙ্গলবার থেকে নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই হামলা গত জানুয়ারি থেকে বন্দী বিনিময় চুক্তির অধীনে চলা যুদ্ধবিরতির সমাপ্তি ঘটিয়েছে।
নতুন হামলার পর গত বৃহস্পতিবার আবারও গাজার নেজারিম করিডোর দখল করে উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া ও দক্ষিণ সীমান্তবর্তী রাফাহ শহরের দিকে অগ্রসর হয়েছে ইসরায়েলের স্থল বাহিনী। তারা উত্তর গাজায় নতুন করে অবরোধ আরোপ করেছে। ফলে বাকি বিশ্ব থেকে আবারও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে গাজা।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ বলেন, ‘আমি সেনাবাহিনীকে গাজায় আরও ভূমি দখল করার নির্দেশ দিয়েছি। হামাস যত বেশি সময় ধরে বন্দীদের আটকে রাখবে, তত বেশি ভূমি হারাবে, যা ইসরায়েলের দখলে চলে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গাজার চারপাশে বাফার জোন বাড়ানো হবে, যা স্থায়ীভাবে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’
কাটজ আরও জানিয়েছেন, ইসরায়েল হামাসের ওপর চাপ বাড়াতে বিমান, নৌ ও স্থল অভিযান জোরদার করবে এবং প্রয়োজনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেবে। এই পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে আরবের অন্য কোনো দেশে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
গাজায় নতুন করে হামলা শুরুর পর গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫০৪ জন নিহত হয়েছেন। এই বিষয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, তারা সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে হামাসের সামরিক ঘাঁটি ও উপকূলীয় এলাকায় নৌ অভিযান পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত জাহাজও ছিল।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও মানবিক সহায়তা প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। আজ শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, গাজায় সরবরাহ করা খাদ্য মাত্র ছয় দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। সংস্থাটির কর্মকর্তা স্যাম রোজ বলেন, ‘আমরা খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিলে হয়তো আরও কিছুদিন চালিয়ে নেওয়া সম্ভব। কিন্তু আমরা দিনের হিসাব করছি, সপ্তাহের নয়।’
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৪৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার ফলে গাজার ২৩ লাখ মানুষের মানবিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে।