প্রকৃতিতে বইছে শীতের আমেজ। শীতের শুরুতে জমে উঠেছে গোপালগঞ্জের পিঠার দোকানগুলো। মৌসুমি পিঠা বিক্রেতারা রাস্তার মোড়ে মোড়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন। শীতের সময় ধোঁয়া ওঠা পিঠা খেতে এসব দোকানে ভিড় করছে মানুষ। শীতে চিতই পিঠার চাহিদা বাড়ে বেশ। বিভিন্ন ধরনের ভর্তার সঙ্গে চিতই খাওয়ার মজাই আলাদা।
গোপালগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকার লেকপাড়ে দেখা মেলে প্রায় ২০টি মৌসুমি পিঠার দোকানের। গত চার বছর ধরে গোপালগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকার লেকপাড়ে পিঠা বিক্রি করছেন সাজাহান-রুপা দম্পতি। তাঁদের দোকানে ৩২ পদের ভর্তা রয়েছে। প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে তাঁরা পিঠা বিক্রি শুরু করেন, চলে রাত ১১টা পর্যন্ত।
সাজাহান-রুপা দম্পতি জানান, বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার পিঠা বেশি বিক্রি হয়। গড়ে ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকার পিঠা বিক্রি হয়। ক্রেতাদের বেশির ভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থী।
আশপাশের অন্যান্য দোকান থেকে তাঁদের দোকানে সব থেকে বেশি পদের ভর্তা পাওয়া যায় উল্লেখ করে এই দম্পতি জানান, ‘আমাদের এখানে শুঁটকি, চিংড়ি শুঁটকি, চ্যাপা শুঁটকি, ইলিশ, বড় মাছ, টাকি মাছ, থানকুনিপাতা, ধনেপাতা, সরিষা, কালোজিরা, বেগুন, টমেটো, আলু, কুমড়া, কচুশাক, কাঁচা মরিচ, শুকনা মরিচ, রসুন, ডালসহ আরও নানান ধরনের ভর্তা পাওয়া যায়। এ ছাড়া আলুভাজি, আলু দিয়ে মুরগি ভুনা, বেগুন ভুনা, তেঁতুল চাটনি, জলপাই চাটনি, আমড়া চাটনি, চালতা চাটনিসহ নানা পদ রয়েছে।
পিঠা খেতে আসা গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘লেখাপড়ার কারণে গ্রাম ছেড়ে গোপালগঞ্জ শহরে আসা। শীতকালে গ্রামের বাড়িতে চিতই পিঠা খাওয়া হতো প্রচুর পরিমাণে। কিন্তু এখন এটি সম্ভব হয় না। পিঠা দেখে গ্রামের কথা মনে পড়ে যায়। গ্রামের পিঠার স্বাদ এখন শহরে বসেই পাচ্ছি।’
বন্ধুদের সঙ্গে আসা এক যুবক বলেন, ‘শীত এলেই আমরা এখানে পিঠা খেতে আসি। সরিষা ও ঝালের কাসুন্দি, সেই সঙ্গে ধনেপাতা বাটা দিয়ে চিতই পিঠা খেতে বেশ মজা। পিঠা খাওয়ার জন্য সিরিয়াল দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়েও থাকতে হয়।’