শশাঙ্ক বরণ রায়
টিয়া পাখির বাচ্চাটি পড়ে গেছে গাছের ডাল থেকে। অসহায় মা পাখিটা উড়ে উড়ে কাঁদছে। রাস্তা দিয়ে কতজন এল গেল, পাখি মায়ের কষ্টে কেউ সাড়া দেয় না। সবার বড্ড তাড়া। কী যেন এখনই পেতে হবে, তাই তারা ছুটছে। আমরা যখন চোখের সামনে মানুষ মরতে দেখে মুখ ফিরিয়ে অন্যদিকে চলে যাই, তখন ১০ বছরের এক ছোট্ট শিশু পাখির ছানাটিকে বাঁচতে গিয়েছিল!
ছোট্ট পাখির ছানার ছটফটানি আর মা পাখির ব্যাকুল কান্না দেখে স্থির থাকতে না পারা একটি ছেলে, ঠাকুরগাঁয়ের দশ বছরের শিশু লিয়ন। বাবা তার থেকেও নেই, কখনও খোঁজ নেন না, আরেকটি বিয়ে করে থাকেন অন্য জেলায়। নিতান্ত দরিদ্র মায়ের স্নেহের আঁচলে বেড়ে ওঠা লিয়নের প্রাণ কেঁদে ওঠে পাখিমায়ের কান্নার সুরে। সে ছুটে যায়। শিশু লিয়নের মায়াময় ছোট্ট দুটি হাত পাখিশিশুটিকে আদরে তুলে নেয় রুক্ষ মাটি থেকে।
একহাতে পাখির বাচ্চা, আরেক হাতে গাছের ডাল ধরে লিয়ন উঠতে থাকে গাছের মগডালে। পাখির ছানাটিকে বসিয়ে দেয় তার মায়ের বাসায়। পরম মমতায় সে একবার তাকায় পাখিশিশুর ছোট্ট চোখে। গাছের উপরে তখন অস্থির পাখিমা, হয়তো সেও পরম মমতায় তাকিয়ে দেখছে একটি মানব শিশুকে। লিয়নের বুকে ভাললাগার এক শিহরণ খেলা করে!
হঠাৎই তার নরম কোমল হাত পিছলে যায় গাছের ডাল থেকে। চোখে অন্ধকার লিয়নের। মাথায় রক্ত, সারা গায়ে রক্ত। উঁচু গাছ থেকে সে প্রথমে পড়ে একটি ইটের দেয়ালে, সেখান থেকে মাটিতে। অজ্ঞান। জ্ঞান ফেরে না তিন সপ্তাহেও। মস্তিষ্কে মারাত্মক আঘাত, হাত ভেঙ্গে গেছে। চিকিৎসা জোটে না টাকার অভাবে। প্রায় আড়াই মাস বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকে ঠাকুরগাঁওয়ের হাসপাতালে। অসহায় মা কাঁদে, ভয়ঙ্কর এক আশংকায় বুক কেঁপে ওঠে তাঁর! এত কষ্টের লিয়নসোনা কী আর চোখ মেলে তাকাবে না? মা বলে ডাকবে না?
২০১৮ সালে মৃতপ্রায় লিয়নকে নিয়ে তার মা মুক্তা রানীর যুদ্ধ শুরু হয়। কিছু মানুষের সহায়তা নিয়ে অবশেষে ঢাকায় আসেন মা। ব্রেইন সার্জারীর পর অনেকটা সুস্থ হয় সে। এরপর নিয়মিত ফলোআপ, ওষুধ চলতে থাকে।
এরপর গত পাঁচ বছরে তিনবার ব্রেইন সার্জারী করতে হয়, শান্ট পরিবর্তন করার জন্য। আবারও ভীষণ অসুস্থ হয়ে সে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এবার আর কোনওভাবেই অর্থের সংস্থান করা যাচ্ছে না। এদিকে তার চিকিৎসা না করলেই নয়। সিটি স্ক্যান দেখে ডাক্তার বলেছেন, সম্ভবত আরেকবার ব্রেইন সার্জারি লাগবে। দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করলে তার জীবন বাঁচানো দুরূহ হয়ে যাবে।
লিয়নদের বাড়িঘর, জমি-সম্পত্তি কিছুই নেই। নানী একটা হোটেলে মশলা বেঁটে কিছু উপার্জন করেন। মা করেন সেলাইয়ের কাজ। এই দুই নারীর সামান্য উপার্জনে লিয়ন, ওর বড়বোনসহ চারজনের পরিবার। অর্থসম্পদ তো কিছুই নেই, নিজস্ব থাকার জায়গাও নেই, থাকেন ভাড়া বাসায়।
বোকা ছেলেটা পাখির ছানাকে বাঁচিয়েছে, তাকে বাঁচাবে কে? লিয়নের অসহায় মা কি বাঁচাতে পারবে লিয়নকে? মস্তিষ্কে মারাত্মক আঘাত নিয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা লিয়ন জানে না, এ সমাজে পাখিরাই ভাল আছে! লিয়ন ভালোবেসে বাঁচিয়েছে পাখির ছানার প্রাণ। হাসি ফিরিয়ে দিয়েছে পাখিমায়ের প্রাণে। লিয়নের মায়ের মুখে হাসি ফিরিয়ে দেবে কে?
লিয়নের মা মুক্তা রানীর মুখে হাসি ফেরাতে কেউ ভূমিকা রাখতে চাইলে এই ফোন নম্বরে ০১৭৮৪৯১৯৩২৩ যোগাযোগ করতে পারেন।
টিয়া পাখির বাচ্চাটি পড়ে গেছে গাছের ডাল থেকে। অসহায় মা পাখিটা উড়ে উড়ে কাঁদছে। রাস্তা দিয়ে কতজন এল গেল, পাখি মায়ের কষ্টে কেউ সাড়া দেয় না। সবার বড্ড তাড়া। কী যেন এখনই পেতে হবে, তাই তারা ছুটছে। আমরা যখন চোখের সামনে মানুষ মরতে দেখে মুখ ফিরিয়ে অন্যদিকে চলে যাই, তখন ১০ বছরের এক ছোট্ট শিশু পাখির ছানাটিকে বাঁচতে গিয়েছিল!
ছোট্ট পাখির ছানার ছটফটানি আর মা পাখির ব্যাকুল কান্না দেখে স্থির থাকতে না পারা একটি ছেলে, ঠাকুরগাঁয়ের দশ বছরের শিশু লিয়ন। বাবা তার থেকেও নেই, কখনও খোঁজ নেন না, আরেকটি বিয়ে করে থাকেন অন্য জেলায়। নিতান্ত দরিদ্র মায়ের স্নেহের আঁচলে বেড়ে ওঠা লিয়নের প্রাণ কেঁদে ওঠে পাখিমায়ের কান্নার সুরে। সে ছুটে যায়। শিশু লিয়নের মায়াময় ছোট্ট দুটি হাত পাখিশিশুটিকে আদরে তুলে নেয় রুক্ষ মাটি থেকে।
একহাতে পাখির বাচ্চা, আরেক হাতে গাছের ডাল ধরে লিয়ন উঠতে থাকে গাছের মগডালে। পাখির ছানাটিকে বসিয়ে দেয় তার মায়ের বাসায়। পরম মমতায় সে একবার তাকায় পাখিশিশুর ছোট্ট চোখে। গাছের উপরে তখন অস্থির পাখিমা, হয়তো সেও পরম মমতায় তাকিয়ে দেখছে একটি মানব শিশুকে। লিয়নের বুকে ভাললাগার এক শিহরণ খেলা করে!
হঠাৎই তার নরম কোমল হাত পিছলে যায় গাছের ডাল থেকে। চোখে অন্ধকার লিয়নের। মাথায় রক্ত, সারা গায়ে রক্ত। উঁচু গাছ থেকে সে প্রথমে পড়ে একটি ইটের দেয়ালে, সেখান থেকে মাটিতে। অজ্ঞান। জ্ঞান ফেরে না তিন সপ্তাহেও। মস্তিষ্কে মারাত্মক আঘাত, হাত ভেঙ্গে গেছে। চিকিৎসা জোটে না টাকার অভাবে। প্রায় আড়াই মাস বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকে ঠাকুরগাঁওয়ের হাসপাতালে। অসহায় মা কাঁদে, ভয়ঙ্কর এক আশংকায় বুক কেঁপে ওঠে তাঁর! এত কষ্টের লিয়নসোনা কী আর চোখ মেলে তাকাবে না? মা বলে ডাকবে না?
২০১৮ সালে মৃতপ্রায় লিয়নকে নিয়ে তার মা মুক্তা রানীর যুদ্ধ শুরু হয়। কিছু মানুষের সহায়তা নিয়ে অবশেষে ঢাকায় আসেন মা। ব্রেইন সার্জারীর পর অনেকটা সুস্থ হয় সে। এরপর নিয়মিত ফলোআপ, ওষুধ চলতে থাকে।
এরপর গত পাঁচ বছরে তিনবার ব্রেইন সার্জারী করতে হয়, শান্ট পরিবর্তন করার জন্য। আবারও ভীষণ অসুস্থ হয়ে সে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এবার আর কোনওভাবেই অর্থের সংস্থান করা যাচ্ছে না। এদিকে তার চিকিৎসা না করলেই নয়। সিটি স্ক্যান দেখে ডাক্তার বলেছেন, সম্ভবত আরেকবার ব্রেইন সার্জারি লাগবে। দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করলে তার জীবন বাঁচানো দুরূহ হয়ে যাবে।
লিয়নদের বাড়িঘর, জমি-সম্পত্তি কিছুই নেই। নানী একটা হোটেলে মশলা বেঁটে কিছু উপার্জন করেন। মা করেন সেলাইয়ের কাজ। এই দুই নারীর সামান্য উপার্জনে লিয়ন, ওর বড়বোনসহ চারজনের পরিবার। অর্থসম্পদ তো কিছুই নেই, নিজস্ব থাকার জায়গাও নেই, থাকেন ভাড়া বাসায়।
বোকা ছেলেটা পাখির ছানাকে বাঁচিয়েছে, তাকে বাঁচাবে কে? লিয়নের অসহায় মা কি বাঁচাতে পারবে লিয়নকে? মস্তিষ্কে মারাত্মক আঘাত নিয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা লিয়ন জানে না, এ সমাজে পাখিরাই ভাল আছে! লিয়ন ভালোবেসে বাঁচিয়েছে পাখির ছানার প্রাণ। হাসি ফিরিয়ে দিয়েছে পাখিমায়ের প্রাণে। লিয়নের মায়ের মুখে হাসি ফিরিয়ে দেবে কে?
লিয়নের মা মুক্তা রানীর মুখে হাসি ফেরাতে কেউ ভূমিকা রাখতে চাইলে এই ফোন নম্বরে ০১৭৮৪৯১৯৩২৩ যোগাযোগ করতে পারেন।
ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষ
২৬ অক্টোবর ২০২৪ফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয়
২৩ অক্টোবর ২০২৪কথায় আছে না—‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি...
২৬ মে ২০২৪প্রতিদিন ভোরে ট্রেনের হুইসেলে ঘুম ভাঙে রাকিব হাসানের। একটু একটু করে গড়ে ওঠা রেলপথ নির্মাণকাজ তাঁর চোখে দেখা। এরপর রেলপথে ট্রেন ছুটে চলা, ট্রেন ছুঁয়ে দেখা—সবই হলো; কিন্তু এখনো হয়নি চড়া। রাকিবের মুখে তাই ভারতীয় সংগীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লার বিখ্যাত গান। ‘আমার বলার কিছু ছিল না, চেয়ে চেয়ে দেখলাম, তুমি চলে
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪