হোম > পথের কথা

বৃদ্ধ মোজাম্মেলের পান বিক্রির টাকায় চলে সংসার

মো. হাবিবুল্লাহ , নেছারাবাদ (পিরোজপুর)

বয়স আশির কোটা ছাড়িয়ে নব্বইয়ে পড়েছে। বয়সের ভারে চোখে এখন চোখে কম দেখেন, আছে নানাবিধ শারীরিক জটিলতা। তবুও পাঁচ সদস্যের পরিবারের একমাত্র ভরসা মোজাম্মেল মিয়া। এ জন্য সব বাঁধা উপেক্ষা করে তাঁকে ছুটতে হয় পানের বাক্স নিয়ে। এই পান বিক্রি থেকে যা উপার্জন হয়, তা দিয়েই চলে মোজাম্মেলের সংসার। 

মোজাম্মেল মিয়ার বাড়ি পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোহাগদল গ্রামে। নিজের সম্পদ বলতে মোজাম্মেলের ছিল নদীর ধারে তিন কাঠা জমি। সেই জমিটুকুরও সিংহভাগ গিলে নিয়েছে সন্ধ্যা নদী। সেই নদীর ধারেই এখন একটি ঝুপড়ি ঘরে তাঁর বসবাস। 

রোদ, বৃষ্টি, ঝড় যত বাধাই আসুক না কেন মোজাম্মেলকে পানের বাক্স গলায় ঝুলিয়ে ছুটে বের হতে হয়। কেননা একদিন উপার্জন বন্ধ থাকলে তাঁদের খাবার জোটে না। তাই প্রতিদিন কাক ডাকা ভোরে বৃদ্ধ মোজাম্মেল পানের বাক্স নিয়ে ছোটেন উপজেলার হাটে বাজারে। 

সংসারে মোজাম্মেলের ত্রিশোর্ধ্ব এক ছেলে থাকলেও নিরুপায় হয়ে পথে ঘাটে পান বিক্রি করতে হয় তাঁকে। কারণ গত কয়েক বছর ধরে তাঁর ছেলে শারীরিকভাবে খুব অসুস্থ। তাই স্ত্রী, ছেলে, পুত্রবধূ ও এক নাতিকে নির্ভর করতে হয় বৃদ্ধ মোজাম্মেলের পান বিক্রির উপার্জনে। 

মোজ্জামেল বলেন, তিন মাস পর পর হাজার দেড়েক ভাতার টাকা পাই। আর ছেলের সামান্য উপার্জন মিলিয়ে আমাদের সংসার চলত। কিন্তু ছেলে অসুস্থ হওয়ায় গত তিন চার বছর ধরে পানের বাক্স নিয়ে রাস্তায় ঘুরছি। সারা দিন ঘুরে তিন চারশ টাকার বেশি বিক্রি হয় না। এই দিয়েই এখন কোনোমতে সংসার চলছে। 

তিনি আরও বলেন, আমিও শারীরিক ভাবে খুব অসুস্থ। বাম চোখে ভালো দেখতে পাই না। চোখ দিয়ে সব সময় পানি ঝরে। তাই অনেকে এই অবস্থা দেখে আমার কাছ থেকে পান খেতে চায় না। আমি খুব ক্লান্ত। এখন আর শরীরেও শক্তি পাই না। পানের বাক্সের ওজন বহন করতে আমার খুব কষ্ট হয়। 

এ সময় মোজাম্মেল মিয়া দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, এভাবে কাঁধে করে পানের বাক্স নিয়ে না ঘুরে যদি কোথাও ছোটখাটো একটা দোকান দিয়ে বসতে পারতাম! তাহলে হয়তো এই বৃদ্ধ বয়সে কিছুটা শান্তি পেতাম। 

চুম্বকে চলছে শেফালীর জীবিকা

লাগামহীন দ্রব্যমূল্য: কেমন আছেন খেটে খাওয়া মানুষ

দার্জিলিংয়ের সেই গোমড়ামুখো চালক

‘ঘরপোড়া গরু সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’

 ‘চেয়ে চেয়ে দেখলাম, তুমি চলে গেলে’

বরই বেচে ভাত জোটে না দেলোয়ারের

দুর্গম পাহাড়ি পথে ভরসা বাবুল বড়ুয়া

টিয়া পাখির বাচ্চার প্রাণ বাঁচানো লিয়নকে বাঁচাবে কে

দুই কিডনিই বিকল, মেয়েকে বাঁচাতে প্রবাসী কর্মী মা এখন অটোরিকশা চালক

সত্তরোর্ধ্ব হাসেমের কাঁধে দিনভর আইসক্রিমের বাক্স, তবুও বুড়ো-বুড়ির সংসারে টানাটানি