হোম > পথের কথা

আরজু বেগম, জীবনসংগ্রামে হার না মানা এক নারী

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) 

আরজু বেগমের (৪০) বাড়ি দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার পৌর এলাকার চকসাহাবাজপুর গ্রামে। দিনমজুর বাবা আফছার আলী তাঁকে বিয়ে দিয়েছিলেন একই গ্রামের আবছার আলী মণ্ডলের ছেলে আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে।

১৯৯৭ সালে বিয়ের পরে কিছুদিন সংসার করেন। পর পর দুই কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সংসারে আর্থিক টানাপোড়েনে গত চার বছর আগে স্বামী আশরাফুল ইসলাম কাজের উদ্দ্যেশে ঢাকায় গিয়ে নিরুদ্দেশ হন। এর পর আর ফিরে আসেননি, স্বামীর সঙ্গে কোনো যোগাযোগও হয়নি। স্বামী চলে যাওয়ার পর দুই মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন আরজু। একপর্যায়ে পত্রিকার এজেন্ট আব্দুল মোন্নাফ মণ্ডলের পরামর্শে সংবাদপত্র বিক্রি শুরু করেন।

প্রতিদিন কাক ডাকা ভোরে এজেন্টের কাছ থেকে খবরের কাগজ সংগ্রহ করে শহরের বিভিন্ন অলি-গলিতে ছোটেন আরজু। রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে সাইকেল চালিয়ে পত্রিকা নিয়ে ছোটেন বিভিন্ন বাড়ি, দোকান ও অফিসে। দুপুরের মধ্যে বিক্রি শেষ করে বাড়িতে ফিরে সংসারের কাজ করেন। 

পত্রিকা বিক্রি করে বেঁচে থাকার একটি উপায় পান অদম্য নারী আরজু বেগম। পত্রিকা বিক্রি করে তাঁর দৈনিক আয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। এই আয়ের টাকা জমিয়ে বড় মেয়ে বাবলী খাতুনকে বিয়ে দিয়েছেন। এখন ছোট মেয়েকে নিয়ে চলছে সংসার। ছোট মেয়ে বাপ্পী খাতুন এবার ফুলবাড়ী শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছে; এবার এইচ এসসি পরীক্ষা দেবে।

আরজু বলেন, তাঁর মতো মেয়ে যাতে অবহেলিত না হয়, সে জন্য মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে সু-শিক্ষিত করে মানুষের মতো মানুষ করতে চাচ্ছেন। মেয়ে যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে সে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। 

সংবাদপত্রের এজেন্ট আব্দুল মোন্নাফ মণ্ডল বলেন, আরজু বেগমকে তিনি আগে থেকেই চিনতেন। বিভিন্ন জায়গায় কাজ খুঁজে না পাওয়ায় সংবাদপত্র বিক্রির পরামর্শ দেন। এখন তিনি একজন ভালো সংবাদপত্র বিক্রেতা।

আরজুর এই পেশাকে শুরুর দিকে অনেকে আড়চোখে দেখলেও এখন সবাই মেনে নিয়েছে। তবে যে যাই মনে করুক, আরজু তাঁর কাজকে ভালোবাসেন। বলেন, স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর অনেক কষ্টে দিন কেটেছে। তখন তো কেউ আমাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। তাই আমার পরিবার বা প্রতিবেশীরা কে কী বলল তাতে কিছু যায় আসেনা।

উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, আরজু প্রতিদিন উপজেলা পরিষদে পেপার দিতে আসে। যে কোনো বিষয়ে আমার কাছে এলে তাকে সহযোগিতা করি। সে খুব পরিশ্রমী একজন নারী। তাকে দেখে আরও অন্য নারীরাও নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলেতে উৎসাহ পাবে। 

চুম্বকে চলছে শেফালীর জীবিকা

লাগামহীন দ্রব্যমূল্য: কেমন আছেন খেটে খাওয়া মানুষ

দার্জিলিংয়ের সেই গোমড়ামুখো চালক

‘ঘরপোড়া গরু সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’

 ‘চেয়ে চেয়ে দেখলাম, তুমি চলে গেলে’

বরই বেচে ভাত জোটে না দেলোয়ারের

দুর্গম পাহাড়ি পথে ভরসা বাবুল বড়ুয়া

টিয়া পাখির বাচ্চার প্রাণ বাঁচানো লিয়নকে বাঁচাবে কে

দুই কিডনিই বিকল, মেয়েকে বাঁচাতে প্রবাসী কর্মী মা এখন অটোরিকশা চালক

সত্তরোর্ধ্ব হাসেমের কাঁধে দিনভর আইসক্রিমের বাক্স, তবুও বুড়ো-বুড়ির সংসারে টানাটানি