হোম > পথের কথা

অনেক সময় বাবা-মাও কিন্তু ঠুস করে চুলের এক জায়গায় কেটে দেয়

ইমরান খান

সম্প্রতি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা ছাত্রদের চুল কেটে দিয়েছেন। এর পরপরই ভাইরাল হয়েছে মাদ্রাসাশিক্ষকের কাঁচিতে ৬ ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ার ভিডিও। এ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। 

এই চুল কেটে দেওয়ার বিষয়টি নিউজে দেখেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান (৪০)। তিনি বলেন—এমন চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা কিন্তু নতুন না। আমরা যখন পড়াশোনা করেছি তখনো শিক্ষকেরা দেখতেন নখ বড় হলো কিনা, চুল কাটছি কিনা। পড়াশোনার সঙ্গে এসব ঠিক না থাকলে স্যারেরা আমাদের বেত দিয়ে মারতেন। আমাদের বাবারাও স্যারদের বলতেন, মাংস আপনের; হাড্ডিডা থাকলেই হবে। এগুলো ভালো জিনিস, অবশ্যই ভালো জিনিস। 

ছাত্রজীবনের স্মৃতি হাতরে কামরুজ্জামান চলে গেলেন পরিবারে। বললেন, অনেক সময় বাবা-মাও কিন্তু এমন করে। ধরেন, চুল না কাটালে মা এসেই ঠুস করে এক জায়গায় কেটে দিল। এই কেটে দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো, যাও; এবার তুমি বাধ্য হয়ে সেলুনে গিয়ে চুল কেটে আসো। 

এই শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও এমন হতে পারে। তবে কোন প্রেক্ষাপটে চুল কেটেছে সেটা জানি না; না দেখে মন্তব্য করা ঠিক না। এটা নিয়ে এত গভীর কিছু করার দরকার আছে বলেও মনে হয় না। এটা শাসন হিসেবেই দেখতে পারেন। তবে এখন যুগের সঙ্গে সব চেঞ্জ হইছে। এখন হয়তো মারের ওই কনসেপ্ট নাই। তবে ডিসিপ্লিন মানানোর জন্য স্টুডেন্টের প্রতি টিচারের একটা অধিকার আছে, সেটাও দেখতে হবে। 

এমন হতে পারে যে টিচারেরা বলছে, চুল কেটে ফেলো, কেটে ফেলো। দুদিন বলছে, এর পরে হয়তো একটু এক্সটিম পর্যায়ে চলে গেছে। সেটা হয়তো ইউনিভার্সিটি পর্যায়ে শোভনীয় না। অন্য প্রসেসে যেতে পারত। বুঝিয়ে বলতে পারত। এখন ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের ওপর অনেক কিছু ডিপেন্ড করে কিন্তু। 

চুল কাটা নিয়ে গণমাধ্যমে খবরের অ্যাঙ্গেল নিয়েও শতভাগ বিশ্বাস রাখতে পারছেন না কামরুজ্জামান। বলেন, পত্রিকা তো অনেক সময় পিনচ করে, ভেতরে পড়লে দেখা যায় ঘটনা অন্য। তাই পুরো ঘটনা জানা দরকার। 

ভিডিওর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, মাদ্রাসার ছাত্ররা কিন্তু চুল কাটার সময় হাসতে ছিল। আর আমরা তো জানি, স্কুল কলেজের তুলনায় মাদ্রাসায় এসব নিয়মকানুন একটু বেশি মানা হয়; কড়াকড়ি থাকে। চুল বড় রাখার তো প্রশ্নই ওঠে না। হয়তো দু-এক দিন বলার পরে কেটে দিছে। 

কথা প্রসঙ্গে আবার শৈশবে ফিরে যান এ পথিক। বলেন, আমাদের সময় বেত ছিল। বেত থেকে ভালোই ছিল ছিল মনে হয়। দরকারও আছে। কারণ, নইলে তো ছাত্র-ছাত্রীরা ভাববে আমি যত অন্যায়ই করি আমাকে মারবে না। এইজন্য বেত দিয়ে মারার প্রয়োজনীয়তাও আছে। আগে যাদের বেত দিয়ে মারছে তাঁরা কি মানুষ হয় নাই? তাঁদের শ্রদ্ধাবোধ আরও ভালো ছিল। এখন দেখবেন, প্রাক্তন শিক্ষকদের পথেঘাটে হাঁটতে দেখলে সবাই তাঁদের সালাম করে। তবে অনেক জায়গায় মারতে মারতে বেহুঁশ করে ফেলছে এটা মানা যায় না। এর ব্যবহারের মাত্রা থাকা দরকার। 

তবে মূল ব্যাপার হলো পরিবেশ-পরিস্থিতি; আর্থসামাজিক অবস্থা। এখন অনেক কিছুর ধারণাই পরিবর্তন হয়েছে। খেয়াল করলে দেখবেন, আগের ওই টিচারও এখন নাই। টিচারদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পর্কটাও আগের মতো নাই। আগে টিচাররা সবার নাম, ঠিকানা জানত; বাবা মাকে চিনত। এখন সম্পর্কটা আগের মতো নাই; তাই শাসনটাও আমরা সহজে নিতে পারছি না। 

শিক্ষকের শাসন সমর্থন করলেও এর মাত্রা নিয়ে ভাবেন এ কর্মকর্তা। তাঁর মতে, শিক্ষার্থীদের চুল কাটার ক্ষেত্রেও এটা দেখা যায় যে, শাসনের মাত্রাটা কোন পর্যায়ে গেছে। এটা শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে কোন আঘাত করছে কিনা তাও দেখতে হবে। 

চুম্বকে চলছে শেফালীর জীবিকা

লাগামহীন দ্রব্যমূল্য: কেমন আছেন খেটে খাওয়া মানুষ

দার্জিলিংয়ের সেই গোমড়ামুখো চালক

‘ঘরপোড়া গরু সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’

 ‘চেয়ে চেয়ে দেখলাম, তুমি চলে গেলে’

বরই বেচে ভাত জোটে না দেলোয়ারের

দুর্গম পাহাড়ি পথে ভরসা বাবুল বড়ুয়া

টিয়া পাখির বাচ্চার প্রাণ বাঁচানো লিয়নকে বাঁচাবে কে

দুই কিডনিই বিকল, মেয়েকে বাঁচাতে প্রবাসী কর্মী মা এখন অটোরিকশা চালক

সত্তরোর্ধ্ব হাসেমের কাঁধে দিনভর আইসক্রিমের বাক্স, তবুও বুড়ো-বুড়ির সংসারে টানাটানি