আঠারো শ দশকে উদ্ভাবিত লেখার যন্ত্র টাইপরাইটার। সে সময়ে কাগজে ঝকঝকে লেখার জন্য এই যন্ত্র ছিল খুবই জনপ্রিয়। বলা চলে বর্তমান আধুনিক কম্পিউটার কি-বোর্ডের নকশা এসেছে তৎকালীন উদ্ভাবিত টাইপরাইটার যন্ত্র থেকে। প্রায় দুই দশক আগের এই লেখনী যন্ত্র ইতি মধ্যেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আধুনিক কম্পিউটার ও ছাপার নতুন সব যন্ত্র এসেছে সাধারণ মানুষের নাগালে।
কিন্তু কক্সবাজারের আবদুস সবুর চাষী এখনো আঁকড়ে ধরে আছেন আঠারো শ দশকের এই লেখনী যন্ত্রটিকে। কক্সবাজার জজ আদালত প্রাঙ্গণে এখনো তিনি নিয়মিত এই টাইপরাইটার যন্ত্রে লিখে চলেছেন। লালদিঘীর পাড় ইডেন গার্ডেনের নিচতলায় একটি টেবিল নিয়ে তিনি বিভিন্ন ব্যাংকের চালানপত্র, দলিল লিখেন এই টাইপরাইটারে।
কক্সবাজার জজ আদালতে তিনি চাষী ভাই নামে পরিচিত। বয়স সত্তর ছুঁই ছুঁই হলেও এখনো বদলাতে পারছেন না এই পেশা। সারা দিন মিলে টাইপরাইটারে লিখে সামান্য আয় হয় চাষীর, যা দিয়ে সংসার চলে না। তাহলে কেন তিনি এখনো এই লেখনী যন্ত্রটি আঁকড়ে ধরে আছেন প্রশ্ন ছিল আজকের পত্রিকার।
সংবাদপত্রকে চাষী জানান, ১৯৭৮ সালে দশ হাজার ৫০০ টাকায় ঢাকা থেকে এই টাইপরাইটার কেনেন। কক্সবাজারের রামু থেকে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোছাইন থেকে তিনি টাইপরাইটারে লেখা শিখেন। সে সময় টাইপরাইটারে ছিল ইংরেজি অক্ষর। পর্যায়ক্রমে বাংলা এসেছে।
বর্তমানে টাইপরাইটারে লিখে তিনি ৩০০-৫০০ টাকা আয় করেন। পাশাপাশি নিজের তৈরি কোর্ট ফাইল বিক্রি করেও কিছু টাকা আয় হয় তাঁর। চাষী বলেন, সে সময় আদালতের যাবতীয় কার্যক্রম এই টাইপরাইটারের মাধ্যমে চলতো এবং দৈনিক ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হতো। কিন্তু এখন কম্পিউটার আসায় কদর একেবারেই নেই।
কথার ভাঁজে আবদুস চাষী বলেন, সরকারের কাছে আবেদন করব নতুন একটি লেখনী যন্ত্র যাতে আমাকে দেয়। আবদুস ছবুরের জীবন মিশে আছে এই টাইপরাইটারে। এখন অপেক্ষা টাইপ রাইটারের অসুখ সেরে ওঠার।