আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
আব্দুর রহিমের সঙ্গে দেখা হয় গতকাল শনিবার রাতে। দুই হাতে ভরা বিভিন্ন ডিজাইনের ক্যালেন্ডার। রাত পার হলেই নতুন বছর। মৌসুমি ক্যালেন্ডার বিক্রেতাদের মোক্ষম সময় এটি। নতুন বছরের কড়কড়ে ক্যালেন্ডার উঠবে ঘরে, অফিসে। শহরের সড়কে, অলিগলিতে ঘুরে ক্যালেন্ডার বিক্রি করছেন আব্দুর রহিম। তবে মোবাইল ফোনের যুগে ব্যবসায় কিছুটা ভাটা।
গতকাল শনিবার বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় সান্তাহার রেলওয়ে জংশন স্টেশন এলাকায় দেখা হয় ক্যালেন্ডার বিক্রেতা আব্দুর রহিমের (৪৫) সঙ্গে।
আব্দুর রহিম জানান, ২০ বছর ধরে এই পেশায় জড়িত। বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি—এই দুই মাস ব্যবসা চলে। বছরের অন্য সময় ট্রেনে শিশুদের বই, পাখা ও অন্যান্য ছোটখাটো জিনিস বিক্রি করে। আয় যা হয় তা দিয়ে কোনোরকমে সংসার চলে।
আব্দুর রহিমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আকারভেদে বিভিন্ন দামে বিক্রি হয় ক্যালেন্ডার। বর্তমানে ছোট ক্যালেন্ডার ২০ টাকা, বড়টা ৩০ টাকায় বিক্রি করেন তিনি। আব্দুর রহিম বলেন, ‘আগের মতো ব্যবসা নাই। এখন মোবাইলেই সব পাওয়া যায়। শুধু ক্যালেন্ডারের তারিখ বদলায়, মাস বদলায়। কিন্তু আমাদের ক্ষুদ্র মানুষের জীবন তো বদলায় না!’
আব্দুর রহিমের বাড়ি বগুড়া শহরে। এক কক্ষের একটি বাসায় স্ত্রী ও এক কন্যাকে নিয়ে ভাড়া থাকেন। স্ত্রী বাসাতে সেলাইয়ের কাজ করেন। রহিমের দিন কাটে পথে পথে। আব্দুর রহিম বিভিন্ন কবি, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদসহ নানা ছবিও বিক্রি করেন। তাঁর স্বপ্ন, শহরে একটি ক্যালেন্ডারের দোকান দেওয়া। কিন্তু অত টাকা তাঁর নেই।
ক্যালেন্ডারের বিক্রি আসলেই কমে গেছে। এরপরও শিক্ষার্থী, চাকরিপ্রার্থী বা চাকরিজীবীরা এখনো ঘরে ক্যালেন্ডার রাখেন। স্মার্টফোনে তো এখন ক্যালেন্ডার দেখাই যায়। এরপরও কেন কিনছেন জানতে চাইলে সোহেল রানা নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘এই ক্যালেন্ডারে বছরের ছুটিসহ দিনপঞ্জি পাওয়া যায়। তাই ৩০ টাকা দিয়ে একটা ক্যালেন্ডার কিনলাম।’