সাক্ষাৎকার

‘আল্লাহ হয়তো চেয়েছেন বাংলাদেশে কাজ করি, সে কারণেই হয়েছে’

বাংলাদেশ দলের নতুন স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন মুশতাক আহমেদ। পাকিস্তানের এই সাবেক লেগ স্পিনার জুনে হতে যাওয়া ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের স্পিন বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন। সংক্ষিপ্ত সময়ের এই দায়িত্ব নিয়ে গতকাল ফোনে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বললেন মুশতাক। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস

প্রশ্ন: বাংলাদেশ দলের স্পিন কোচ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে কোন বিষয়টি বেশি ভূমিকা রেখেছে? 
মুশতাক আহমেদ: আমার ম্যানেজার এজেন্টের সঙ্গে কথা বলেছিল। আমার কাছে বেশ কিছু প্রস্তাব ছিল। তবে আল্লাহ হয়তো চেয়েছেন এখানে কাজ করি, সে কারণেই এটা হয়েছে। 

প্রশ্ন: বাংলাদেশে কতটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে কাজটা? 
মুশতাক: এটা চ্যালেঞ্জিং নয়, রোমাঞ্চকর হবে। অনেক প্রতিভাবান স্পিনার আছে দলে। তাদের কাছে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে হবে। মৌলিক বিষয় জানাতে হবে যে কীভাবে উইকেট পেতে হবে, ম্যাচ জিততে হবে। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসলে তাদের কাছ থেকে কোচিংয়ের চেয়ে ফলই বেশি পেতে চাইবেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোচিং হচ্ছে খেলোয়াড়দের কাছ থেকে পারফরম্যান্স আদায় করা। আমার কাছে যা আছে, ওদের সেটাই দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশা আল্লাহ। 

প্রশ্ন: চ্যালেঞ্জিং কেন বলছি, আসছেন সংক্ষিপ্ত মেয়াদে। এই অল্প সময়ে আসলে কতটা বড় পরিসরে কাজ করা সম্ভব? 
মুশতাক: যেটা বললাম, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আসলে অনেক সময় দরকার হয় না। হ্যাঁ, আপনাকে খেলোয়াড়দের সঙ্গে একটা সম্পর্ক গড়তে হবে। সম্পর্কটাই হচ্ছে আসল বিষয়। খেলোয়াড়দের সঙ্গে সম্পর্ক গড়াটা আমার শক্তির জায়গা। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করব। এরপর তাদের কাছ থেকে ফল পাব। আপনি ঠিকই বলেছেন, একেবারেই অল্প সময়। তবে এই সময়েও আপনি পার্থক্য গড়তে পারেন—এ বিশ্বাস কোচ হিসেবে আপনার থাকতে হবে।

প্রশ্ন: বিসিবির সঙ্গে লম্বা সময় কাজ করার কোনো পরিকল্পনা আছে?
মুশতাক: সত্যি বলতে, নিশ্চিত না।

প্রশ্ন: আপনাকে কি লম্বা মেয়াদে কাজ করতে বিসিবি কোনো প্রস্তাব দিয়েছে?
মুশতাক: আমি এখনো নিশ্চিত নই। সেখানে আগে যাই, তারপর দেখি কী হয়। 

প্রশ্ন: ব্যাটে-বলে সব মিলে গেলে লম্বা সময় কাজ করার ব্যাপারে আপনার নিজের ভাবনাটা কী আসলে? 
মুশতাক: যদি সব ঠিকঠাক থাকে, আমাদের খুব ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে উঠলে আশা করি লম্বা মেয়াদে কাজ করা যাবে। যেখানেই আমি গিয়েছি যেমন—ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ; যে দেশেই কাজ করেছি—ইংল্যান্ডে ছয় বছর এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুই বছর কাজ করেছি। দেখা যাক কী হয়, অপেক্ষা করতে হবে।

প্রশ্ন: আপনাকে এই সময়ে সাদা বলের ক্রিকেটে, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতেই বেশি মনোযোগী থাকতে হবে। সংক্ষিপ্ত এই সময়ে কোন বিষয়ে আপনি বেশি গুরুত্ব দিতে চান? 
মুশতাক: পারফরম্যান্স। কীভাবে ভালো পারফরম্যান্স হয়। সেটি করতে প্রতিপক্ষ, কন্ডিশন বুঝতে হবে আর খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সেরাটা পেতে হবে। পরিস্থিতি, প্রতিপক্ষ বুঝে সহজ বেসিক প্ল্যানটা দিতে হবে যে ম্যাচ জেতাতে কীভাবে উইকেট পেতে হবে। 

প্রশ্ন: এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্পিনারদের জন্য কী ধরনের চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে? বিশেষ করে অচেনা যুক্তরাষ্ট্রের কন্ডিশনে?
মুশতাক: আমাদের আগে পিচ দেখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের কারও সেভাবে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। এরপর আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে স্পিনারদের কেমন বৈচিত্র্য সেখানে দরকার। পিচ আগে বুঝতে হবে, তারপর বলা যাবে ওখানে আসলে কী হতে চলেছে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ দলে সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজের মতো অভিজ্ঞ স্পিনার আছেন। এটা আপনার কাজ কতটা সহজ করে দিতে পারে?
মুশতাক: হ্যাঁ, অবশ্যই। কারণ, অভিজ্ঞতা আপনি কিনতে পারবেন না। সাকিব বিশ্বের অন্যতম সেরা বাঁহাতি স্পিনার। বাংলাদেশে যাওয়া এবং তাদের সঙ্গে কাজ করাটা আমার জন্য রোমাঞ্চকর হতে চলেছে। এখনো তাদের সহায়তা প্রয়োজন, তাদের দিকনির্দেশনা দরকার। আপনি সেরা খেলোয়াড় হলেও কখনো কখনো সামান্য সহায়তাও আপনার ক্যারিয়ারে অনেক উপকার করতে পারে।

প্রশ্ন: আপনি নিজেই একজন ম্যাচ জেতানো লেগ স্পিনার ছিলেন, সে কারণে প্রশ্নটা করা। বাংলাদেশে একজন ভালো মানের লেগ স্পিনার নিয়ে হাপিত্যেশ আছে। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সংস্কৃতিও খুব একটা রিস্ট স্পিনার পরিচর্যা করার জন্য সহায়ক নয়। বিষয়টি নিয়ে আপনার মতামত কী?
মুশতাক: এটি গুহার মধ্যে একটি হীরা খুঁজে পাওয়ার মতোই ব্যাপার। এখানে স্থানীয় কোচদের বড় একটা ভূমিকা রাখতে হয়। স্কুল ক্রিকেট, ক্লাব ক্রিকেট, ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট—এই তিনটি হচ্ছে প্ল্যাটফরম। অনেক মিস্ট্রি স্পিনার আছে। এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। তবে কখনো কখনো আমরা তাদের পাই না। তাদের খুঁজে বের করে অপরিণত প্রতিভাদের নিয়ে কাজ করতে হয়। তাদের প্রচুর লাল বলের ক্রিকেট খেলার সুযোগ তৈরি করে দিতে হয়। এক-দুই বছর এভাবে খেলে এরপর জাতীয় পর্যায়ে আনতে হয়। সরাসরি জাতীয় দলে আনা যাবে না। এই ভুলটা আমরা অনেকে করে থাকি। একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাদের আনতে হবে। তাদের নিয়ে কাজ করতে হবে। যদি তাদের নিয়ে ঠিকঠাক কাজ করা যায়, সঠিক অ্যাকশন থাকে, এক-দুই বছরের মধ্যে পেয়ে যাবেন। এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।

ওদের হারাতে সবার মধ্যে একটা ক্ষুধা কাজ করছিল

জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়াটা আমার কাজের ফল

‘আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে খেলোয়াড়দের শরীরের রোম দাঁড়িয়ে গিয়েছিল’

সব দলের চেয়ে আমরাই ছিলাম সেরা

বিশ্বাস রাখেন কয়েক বছরের মধ্যেই এই দল অনেক ভালো করবে

সবাই আমাকে বিশ্বাস করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে

আফগানদের কাছে হার বড় কোনো আঘাত নয়

ভুটান ম্যাচের পরই না হয় ট্রফি নিয়ে ভাবব

‘নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাংলাদেশের বাইরে যাবে না’

সাকিব পারবে যদি ছেলেরা তাকে অনুসরণ করে

সেকশন