প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য ইউরোপের দেশ নরওয়ের নাম আছে। পর্বতঘেরা সামুদ্রিক খাড়ি, আশ্চর্য সুন্দর উপত্যকা, পাহাড়ি নদী, মনোমুগ্ধকর নর্দার্ন লাইট কী সেই সেখানে! তবে শুনে চমকাবেন এত সৌন্দর্যের ভিড়ে নরওয়ের অন্যতম আকর্ষণ একটি পাথর। শুধু ওই পাথরটি দেখতে বহু পর্যটক কিয়াক পর্বতে যান।
আশ্চর্য এ পাথরের নাম কিয়াকবলটেন। রোগালানদ কাউন্টির স্যান্ডলেস এলাকার কিয়াক পর্বতের গভীর এক ফাটলে আটকে থাকা প্রাচীন এক পাথর এটি। বলা চলে আপাতদৃষ্টিতে অতল এক গহ্বরের ওপরে পর্বতের দুটি পাথুরে দেয়ালের মধ্যে এই মাঝারি আকারের বোল্ডারটি আটকে আছে। এর আকার ৫ ঘন মিটার।
গহ্বরটি ৯৮৪ মিটার বা ৩ হাজার ২২৮ ফুট গভীর। তাই এখান থেকে পড়লে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। তবে এই ঝুঁকি বাদ দিলে পর্বতারোহণের বিশেষ কোনো সরঞ্জাম ছাড়া তুলনামূলকভাবে সহজে ট্র্যাকিং করে পাথরটির ধারে পৌঁছে যেতে পারবেন। পাথরটির আশ্চর্য অবস্থান এবং সেই সঙ্গে পৌঁছানো সহজ হওয়ায় এটি নরওয়ের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এই পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা ছবি দিতে বেজায় আগ্রহ পর্যটকদের।
কিয়াক পর্বত কিন্তু বেস জাম্পিংয়ের জন্যও খুব জনপ্রিয়। এ ধরনের জাম্পিংয়ে পাথর কিংবা অন্য কোনো স্থির কাঠামোর ওপর থেকে প্যারাস্যুটসহ লাফ দেন রোমাঞ্চপ্রেমীরা।
ছবিতে যতটুকু দেখা যায়, বলা হয় পাথরটি তার চেয়ে বেশি প্রশস্ত। তারপরও পা একটু এদিক-সেদিক হলেই বহু নিচে পড়ার আশঙ্কা। কিন্তু এ পাথর থেকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কেউ পা পিছলেছেন, এমন ঘটনা শোনা যায়নি। অবশ্য কিয়াক পর্বত থেকে বেস জাম্প করতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
বেস জাম্পারদের কাছে ভারি জনপ্রিয় কিয়াক পর্বত। নরওয়ের নাগরিক স্টেইন এডভারসেন ১৯৯৪ সালে প্রথম এখান থেকে লাফ দেন বলে জানা যায়। ৬০ হাজার বারের কাছাকাছি বেস জাম্প দেওয়া হয়েছে এখন পর্যন্ত পর্বতটি থেকে।
নরওয়ের গ্রীষ্মের সময় অর্থাৎ জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জায়গাটি ট্র্যাকিংয়ের জন্য বেশি বিখ্যাত। ওই সময়টায় আবহাওয়া ভালো থাকায় বেশ সহজে পৌঁছে যেতে পারবেন পাথরটির কাছে। তবে যেহেতু আপনার মতো আরও অনেকেই এ সময় পাথরটির ওপরে উঠতে ও ছবি তুলতে চান, খুব সকালে সেখানে পৌঁছে গেলে বেশি সময় লাইনে দাঁড়াতে হবে না।
সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল, গো ফিইরডস, টাইমস অব ইন্ডিয়া