পানির অপর নাম জীবন। সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত পানি পানে উৎসাহও দেওয়া হয় প্রায়ই। কিন্তু অতিরিক্ত পানি পানের ফলে ডেকে আনা হতে পারে ভয়াবহ বিপদও। এমনই বিপদে পড়েছিলেন মার্কিন অভিনেত্রী ব্রুক শিল্ডস। তিনি জানিয়েছেন, অতিরিক্ত পানি পানের কারণে তাঁর দীর্ঘ সময় ধরে খিঁচুনি হয়েছিল। একপ্রকার মরতেই বসেছিলেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ব্রুক শিল্ডস জানিয়েছেন, সেই ঘটনায় তাঁর মুখমণ্ডল নীল হয়ে গিয়েছিল এবং ফেনা উঠে গিয়েছিল। ফলে তাঁকে দ্রুতই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়। সেই ঘটনার স্মৃতিচারণা করে ব্রুক শিল্ডস বলেন, ‘আমার ব্যাপক খিঁচুনি শুরু হয়েছিল। মুখমণ্ডল নীল হয়ে গিয়েছিল। নিজের জিভ নিজেই কামড়াচ্ছিলাম। এরপর যে ঘটনাটি আমার মনে আছে সেটি হলো—আমাকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে দেওয়া হয়।’
ব্রুক শিল্ডস যে রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেটিকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে ওভার হাইড্রেশন বা শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পানি থাকা। একে ওয়াটার টক্সিসিটিও বলা হয়। এ অবস্থায় মানুষের ব্রেইনের দুটি অংশই আক্রান্ত হয় এবং কার্যক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) তথ্যানুসারে, এই অবস্থায় খিঁচুনি শুরু হলে শরীরের পেশি শক্ত হয়ে যেতে পারে এবং শরীরে পর্যায়ক্রমে কাঁপুনি বা খিঁচুনি শুরু করতে পারে। এমনকি এতে ব্যক্তি জ্ঞান হারাতে পারে, চিৎকার করতে পারে এমনকি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে পারে।
ব্রুকস জানিয়েছেন, তাঁর চিকিৎসক তাঁকে বলেছেন, ব্রুকস প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলেও তিনি পর্যাপ্ত লবণ ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করেননি। চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, ব্রুকস যখন প্রচুর পানি পান করেছিলেন, তখন তার শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কম ছিল। যা খুব বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ, পানি রক্তে সোডিয়ামের ঘনত্বকে কমিয়ে দেয়, যার ফলে হাইপোন্যাট্রেমিয়া (শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যাওয়ায় হাইপোন্যাট্রিমিয়া বলে) নামে পরিচিত একটি অবস্থার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় এই হাইপোন্যাট্রিমিয়া প্রাণসংহারক হয়ে উঠতে পারে।
সিডিসির তথ্য অনুসারে, সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরুষের জন্য দিনে ৩ দশমিক ৭ লিটার এবং নারীর জন্য ২ দশমিক ৭ লিটার পানি বা তরলজাতীয় পদার্থ গ্রহণই যথেষ্ট। তবে চিকিৎসকেরা প্রতি ঘণ্টার একজন ব্যক্তিকে ১ দশমিক ৪ লিটারের বেশি তরল গ্রহণের পরামর্শ দেন না।