সুন্দরবনে বাঘ গণনার ক্যামেরা ভাঙচুর ও মেমোরি কার্ড চুরির ঘটনায় ১৪ বনজীবীদের আটক করেছে বন বিভাগ। গত দুইদিন (মঙ্গল ও বুধবার) সাতক্ষীরার পশ্চিম সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। পরে চুরির ঘটনায় সাতক্ষীরা আদালতে দায়ের করা দুটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার বনজীবীরা হলেন–জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুল ওহাব, আবুল হোসেন, মো. মহিবুল্লাহ, নুরুল আলম, আব্দুর রহিম, আমজাদ হোসেন, আছাদুল ইসলাম, রিপন হোসেন, বাবর আলী, আমজাদ হোসেন (২), ইউনুস আলী, মুন্নাফ গাজী ও আকবর হোসেন। তাঁরা সবাই শ্যামনগর ও কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
প্রতি বছরের মতো গত ১ জানুয়ারি থেকে সুন্দরবনে বাঘ গণনার কাজ শুরু করে বন বিভাগ। বাঘ গণনার জন্য পশ্চিম সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে ৩৭৬টি ক্যামেরা বসানো হয়। প্রথম দিকে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের নোটাবেঁকী এলাকা থেকে দুষ্কৃতকারীরা বাঘ গণনার কাজে ব্যবহৃত ৮টি ক্যামেরা নামিয়ে নিয়ে ভাঙচুর ও মেমোরি কার্ড নিয়ে যায়।
সুন্দরবনের বন বিভাগের কর্মকর্তারা চুরির বিষয়টি ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বুঝতে পারেন। অনুসন্ধান করে সুন্দরবনের নোটাবেঁকী এলাকা থেকে ৮টি ক্যামেরা চুরি হওয়ার বিষয়ে তারা নিশ্চিত হন।
ক্যামেরা চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার রিপনের বাবা আমির হোসেন বলেন, তার ছেলে অন্যদের সঙ্গে অভয়ারণ্যে গিয়ে মাছ ধরায় আটক করে ভিন্ন মামলায় জড়ানো হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘যারা সুন্দরবনে বাঘ–হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ক্যামেরা তারাই অপসারণ করতে পারে। অথচ প্রকৃত অপরাধীদের আটকে ব্যর্থ হয়ে বন বিভাগ নিরীহ বনজীবীদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।’
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক ইকবাল হোসাইন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ক্যামেরা চুরি ঘটনায় গত ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি মোট ১৪ জনকে আটক করা হয়। সাতক্ষীরার আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়েরের পর তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
বন বিভাগের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সুন্দরবনের মধ্যে ঢুকে যারা নানা ধরনের অপকর্ম করে থাকে কিংবা অপতৎপরতায় জড়িত তারা এসব ক্যামেরা সরিয়েছে।’ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও তিনি দাবি করেন। ক্যামেরা চুরির সাধে জড়িতদের চিহ্নিত করার জন্য বন বিভাগের একাধিক দল কাজ করছে বলেও জানান তিনি।