খালাসের অপেক্ষায় থাকা ভারত থেকে আমদানি করা ৩৭০ টন আলু বেনাপোল বন্দরে পচতে শুরু করেছে। এসব আলু রংপুরে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে দ্রুত খালাস না হলে এসব আলু খাওয়ার অযোগ্য হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্মকর্তারা বলছেন, চালানটি যাতে দ্রুত খালাস হয়, সেই সহযোগিতা করছেন তাঁরা।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে ১৬ ট্রাকে ৩৭০ মেট্রিক টন আলু আমদানি হয়। তবে আমদানি করা আলু ২০০ কিলোমিটার দূরে থেকে লোড করে বেনাপোল বন্দরে পৌঁছাতে ছয় দিন লেগে যায়। এতে তীব্র গরমে ট্রাকে থাকা আলু পচে রস পড়তে দেখা গেছে।
আলুর এই চালানের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্টিগ্রেটেড ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ। তারা বলছে, এই আলুর চালান যাবে রংপুরে।
আলুবাহী ট্রাকচালকেরা জানান, তাঁরা ভারতীয় ট্রাক থেকে আলু খালাস করে রংপুরে নিয়ে যাবেন। কিন্তু গরমে বন্দরেই ট্রাকে আলু পচতে শুরু করেছে। দ্রুত খালাস না হলে এগুলো আরও নষ্ট হবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্মকর্তা হেমন্তু কুমার সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভারত থেকে ৩৭০ মেট্রিক টন আলু আমদানি হয়েছে। এসব আলু মান পরীক্ষা শেষে দ্রুত খালাসে সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
আলু আমদানি বাড়লেও বাজার সিন্ডিকেটের কারণে ভোক্তারা কোনো সুবিধা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ সাধারণ ক্রেতাদের।
বেনাপোলসহ দেশের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে আলু আমদানি বাড়লেও বাজারে দিনে দিনে বাড়ছে দাম। গত বছর এই সময়ে যে আলু ২২ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি হয়েছে, এখন বাজারে এর মূল্য ৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
বেনাপোল বাজারের আলু বিক্রেতা সাইদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজারে আলুর সরবরাহ কম থাকায় দাম কমছে না। বর্তমানে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।’
সাধারণ ক্রেতারা জানান, ভারত থেকে আলু আমদানি হলেও সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে দাম কমছে না। বাজারে কারও কোনো তদারকি না থাকায় সবকিছুই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
জানা যায়, দেশে প্রতিবছর আলুর চাহিদা প্রায় ১ কোটি মেট্রিক টন। কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ চাহিদার বিপরীতে সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে আলুর উৎপাদন ছিল ১ কোটি ১২ লাখ মেট্রিক টন। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হলেও, মজুত করতে ব্যবসায়ীরা সারা বছর কম-বেশি আলু আমদানি করে থাকেন।
পরবর্তীতে ২ নভেম্বর থেকে শুরু হয় আলু আমদানি। বেনাপোলসহ দেশে বিভিন্ন বন্দর দিয়ে বাড়ছে আলুর আমদানি। তবে ভরা মৌসুম ও আমদানি বাড়লেও তার সুফল পাচ্ছে না ক্রেতারা।