নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিনা) চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের দুই সদস্য।
অভিযোগ উঠেছে, ছাত্র-জনতার গন–অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিনা) নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। এমন অভিযোগ খোদ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের। চাকরি পাওয়া ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম সিয়াম হোসাইন আলী। তিনি ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রলীগের ২০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক।
গত মাসে বিনার একটি প্রকল্পে ডিজির সুপারিশে শ্রমিক পদে সিয়াম হোসাইন আলীকে নিয়োগ দেওয়া হয় বলে স্বীকার করেছেন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. মাহাবুবুল আলম তরফদার। তিনি জানান, সম্প্রতি একটি প্রকল্পে ১৫ জন শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে সিয়াম হোসাইন আলীও রয়েছেন। নিয়োগের পর শুনেছি তিনি ছাত্রলীগ করেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘শ্রমিক পদে একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিয়াম হোসাইন আলীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে তার পদ-পদবি আছে, তা আমি জানতাম না। সংশ্লিষ্ট কমিটি তার নাম সুপারিশ করায় আমি চূড়ান্ত অনুমোদন করেছি।’
অভিযোগ উঠেছে, বিগত সরকারের সুবিধাভোগী বিনার ডিজি আবুল কালাম আজাদ প্রতিষ্ঠানটিতে ছাত্রলীগ পুনর্বাসন করছেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের এক সভায় তিনি ২৯ জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাকে জ্যেষ্ঠতা পদোন্নতি দেওয়ার প্রস্তাব করেন। ওই ২৯ জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার মধ্যে প্রায় ১০ জন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের পদধারী ও সক্রিয় নেতা–কর্মী বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য কৃষিবিদ এ কে এম আনিসুজ্জামান আনিস।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিনার পরিচালনা পর্ষদের সদস্য কৃষিবিদ মো. শফিকুল আলম সোহেল। তিনি বলেন, ‘শুনেছি বিনাতে এক ছাত্রলীগ নেতাকে চাকরি দেওয়া হয়েছে, অথচ আমরা কিছুই জানি না। এ ছাড়া প্রায় এক ডজন ছাত্রলীগ নেতাকে জ্যেষ্ঠতা পদোন্নতি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি দুঃখজনক।’
এ বিষয়ে ডিজি ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘২৯ জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার জ্যেষ্ঠতা পদোন্নতির বিষয়টি নিয়ে পরিচালনা পর্ষদে আলোচনা হলেও এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি। তবে এই তালিকায় কেউ কোনো সংগঠন করে কি না, আমার জানা নেই।’
এদিকে টানা সপ্তম দিনের ন্যায় আজ সোমবার দুপুরে বিনা কার্যালয়ের প্রথম ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে ডিজি ড. আবুল কালাম আজাদের অপসারণ দাবি করেছেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ডিজিকে আওয়ামী দোসর উল্লেখ করে অবিলম্বে তাঁর অপসারণের দাবি জানান।