সিলেটে পাওনা টাকার দ্বন্দ্বে আরেক নারীর হাতে খুন হয়েছেন গৃহিণী আফিয়া বেগম সামিহা (৩১)। মোছা. মাজেদা খাতুন মুন্নি নামে এক নারীকে আটকের পর হত্যা রহস্য উদ্ঘাটিত হয় বলে দাবি করেছে র্যাব। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানায় র্যাব-৯।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৯ এর মিডিয়া কর্মকর্তা এএসপি আহসান-আল-আলিম জানান, গত ২৩ আগস্ট (মঙ্গলবার) রাত ১১টার দিকে মহানগরীর উত্তর বালুচর এলাকায় পাঁচতলা সিকান্দর মহলের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে আফিয়া বেগম সামিহা নামে ওই গৃহবধূর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সিলেটের শাহপরাণ থানায় গত ২৪ আগস্ট আফিয়ার মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার সূত্র ধরে রহস্য উদ্ঘাটনে র্যাব-৯ তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে মোছা. মাজেদা খাতুন মুন্নি নামের ওই নারীকে আফিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় র্যাব। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৯ অভিযান চালিয়ে মুন্নিকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। মুন্নি হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার সারংপুর গ্রামের আব্দুল গনির মেয়ে।
এ কর্মকর্তা আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে মুন্নি র্যাবকে জানান, আফিয়ার সঙ্গে তাঁর টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। আফিয়ার বাসায় মাজেদা সাবলেট থাকতেন। কিন্তু বেশির ভাগ সময় মাজেদা বাসায় অবস্থান করতেন না। আফিয়ার কাছে মাজেদা বিভিন্ন সময় টাকা-পয়সা গচ্ছিত রাখতেন।
একপর্যায়ে মাজেদার পাওনা টাকা আফিয়া দিতে অস্বীকার করেন। ফলে মাজেদা আফিয়ার ওপর ক্ষিপ্ত হন ও তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
এএসপি আহসান-আল-আলিম বলেন, ঘটনার দুদিন আগে (১৮ আগস্ট) আফিয়ার বাসায় আসেন মাজেদা। ঘটনার দিন (২০ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে আফিয়া ও মাজেদার মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে ঝগড়া হয়। পরে ২১ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টার দিকে মাজেদা রান্নাঘর থেকে শিল নিয়ে এসে আফিয়ার মাথায় আঘাত করেন। আফিয়া বিছানায় লুটিয়ে পড়লে মাজেদা বাইরে থেকে তালা মেরে তাঁর মালামাল ও আফিয়ার মোবাইল ফোনসেট নিয়ে বানিয়াচংয়ে নিজ বাড়িতে চলে যান। মরদেহ উদ্ধারের সময় আফিয়ার ১৪ মাস বয়সী শিশুকন্যাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
