Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

ধুলোই জীবিকার উৎস

নুরুল আলম, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) 

ধুলোই জীবিকার উৎস

শতাধিক নারী একসঙ্গে ধুলোবালির স্তূপ হাতড়াচ্ছেন। যেন কিছু একটা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। কাছে গিয়ে দেখা গেল, তাঁরা ওই ধুলোর আবর্জনার মধ্যে থেকে স্ক্র্যাপ লোহা, তামা, অ্যালুমিনিয়াম, তার, প্লাস্টিকের টুকরো খুঁজে বের করছেন। এটাই তাঁদের কাজ। এই কাজ করেই তাঁদের আয় হয়, চলে সংসার।

চট্টগ্রামের মিরসরাই পৌরসভার বাদামতলী এলাকায় ওই প্রতিষ্ঠানের দেখা মেলে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানালেন, এই প্রতিষ্ঠানে ১৫০ থেকে ২০০ জন নারী শ্রমিক কাজ করেন। প্রতিদিন সকাল ৯টায় কাজ শুরু হয়ে চলে বেলা ৩টা পর্যন্ত। দৈনিক পারিশ্রমিক ৩০০ টাকা। এর উদ্যোক্তা ফরহাদ হোসাইন। প্রাচীরঘেরা ২ একর জায়গার ওপর গড়ে উঠেছে তাঁর ধুলোবালি থেকে স্ক্র্যাপ সংগ্রহের ব্যবসা।

গত বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটিতে গিয়ে কথা হয় তরুণ উদ্যোক্তা ফরহাদের সঙ্গে। তিনি জানালেন, ২০১৮ সালে এই ব্যবসা শুরু করেন তিনি। সীতাকুণ্ড শিপইয়ার্ডে পুরোনো জাহাজ কেটে বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস (বিএসআরএম) কোম্পানি ইস্পাত, লোহা তৈরির জন্য স্ক্যাপগুলো বারইয়ারহাটের কারখানায় নেয়। সেখানে কয়েক দফায় বাছাইয়ের মাধ্যমে লোহা সংগ্রহ করা হয়। পড়ে থাকে অবশিষ্ট ধুলো-আবর্জনা। সেই আবর্জনাই কিনে নেন ফরহাদ। এরপর তা নিজের প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আবার বাছাই করেন। এর থেকে বেরিয়ে আসে ছোট ছোট লোহা, তামা, অ্যালুমিনিয়াম, তার ও প্লাস্টিকের টুকরো। সেগুলো ভরা হয় আলাদা আলাদা ব্যাগে। একেক ধরনের পণ্যের একেক দর, একেক ক্রেতা। কোনো ক্রেতা লোহার টুকরো কেনেন, কেউ অ্যালুমিনিয়াম, আবার কেউ অন্য কিছু কিনে নেন। তাঁরা আবার সেগুলো সরবরাহ করেন ভিন্ন ভিন্ন কারখানায়। এরপর সেগুলো গলিয়ে আবার নতুন কিছু তৈরি করা হয়।

ফরহাদের প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ৬৫ বছর বয়সী জেবু ধন জানালেন, তিনি দুই বছর ধরে এখানে কাজ করেন। প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে মজুরি পান। সেই আয় দিয়েই চলেন তিনি। স্বামী নুর মোহাম্মদ মারা যাওয়ার পর পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ের কেউ তাঁর দায়িত্ব নেয়নি। সবাই যার যার পরিবার নিয়ে আলাদা থাকে। এক ছেলে মানসিক প্রতিবন্ধী। তাকে নিয়েই জেবু ধনের সংসার। কারখানার আরেক শ্রমিক নাজমা আক্তার বললেন, দেড় বছর ধরে কাজ করেন এখানে। এই আয় দিয়েই সংসার চলে। এক ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে।

সরকারের সহযোগিতা পেলে ব্যবসার প্রসার ঘটবে বলে জানালেন ফরহাদ হোসাইন। বললেন, সহযোগিতা পেলে ডাস্ট কাটিং কারখানা করবেন তিনি। এমন একটি কারখানা করা গেলে আরও মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, এই ব্যবসার মাধ্যমে একদিকে পরিবেশের সুরক্ষা হচ্ছে, কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে। আগে কারখানাগুলো লোহা সংগ্রহের পর আবর্জনা ফেলে দিত। তা পরিবেশের ক্ষতি করত। কিন্তু তিনি সেই আবর্জনাই সংগ্রহ করে তা কাজে লাগাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মধ্যে প্রায় সবাই নারী। তাঁদের বেশির ভাগই বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা কিংবা দুস্থ। এই কাজ না পেলে হয়তো ভিক্ষাবৃত্তিই করতে হতো কাউকে কাউকে। এখন এই ধুলোবালিই তাঁদের জীবিকার উৎস।

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ