Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

প্লাস্টিক পণ্য ও করোনা বিপদে ফেলেছে তাঁদের

আরিফ আহম্মেদ, গৌরীপুর

প্লাস্টিক পণ্য ও  করোনা বিপদে ফেলেছে তাঁদের

করোনার সংক্রমণ কমে আসায় অধিকাংশ পেশার মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। তবে এখনো দুর্দিন পিছু ছাড়েনি কুটির শিল্পের কারিগরদের। সংক্রমণ ঠেকাতে দেশব্যাপী দীর্ঘ লকডাউনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও মানবেতর জীবনযাপন করছেন তাঁরা। একদিকে বাজারে প্লাস্টিকজাত পণ্যের প্রসার, অপরদিকে উৎপাদিত পণ্য বাজারে বিক্রি করতে পারছেন না হস্তশিল্পের কারিগররা, চাহিদাও কম। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবন কাটছে তাদের। প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় প্রশাসনের সহযোগিতাও মেলেনি তাঁদের।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় ধান কাটা শুরু হলে বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকত খাঁচা ও খাদির। আর গরমে ব্যাপক চাহিদা ছিল হাতপাখার। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগররা সারা বছরই ব্যস্ত সময় পার করতেন বাঁশ আর বেতের বুননে। বিশেষ করে ফসলের মৌসুমে অর্থাৎ ধান কাটার সময় খাঁচা ও খাদির প্রচুর চাহিদা থাকত বাজারে। এ ছাড়া কারিগররা সারা বছরই খাঁচা বিক্রি করতে পারতেন। তখন কৃষকের গোয়াল ভর্তি ছিল গরু। সেই গরুর খাবার দেওয়া হতো খাঁচায়। ঘাস কাটা, খেড় টানা ও কৃষি কাজে খাঁচার ব্যবহার হতো।

কারিগররা বলছেন, এখন সময় পাল্টেছে, কৃষক আর গরু দিয়ে হাল চাষ করেন না। তাই গোয়াল ভর্তি গরুও নেই। আর ধান টানার খাদির জায়গা দখল করেছে প্লাস্টিকের তৈরি বালতি ও ড্রাম। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ থাকায় এখন চাহিদা কমে গেছে হাতপাখার।

এমনি আক্ষেপের কথা জানাচ্ছিলেন-ভাংনামারী ইউনিয়নের নাওভাঙ্গা গ্রামের মৃত নওয়াজ আলীর ছেলে নবী হোসেন। ৭৫ বছরে পা দিয়ে আজও তিনি খাঁচা বুনে চলেছেন। ৫০ বছর ধরে খাঁচা তৈরি করছেন তিনি। তাঁর ভাই আলী হোসেনও একই পেশায় জড়িত। অন্য কোনো কাজ তাঁদের জানা নেই। এ কারণে বেত শিল্পের এই দুর্দিনেও তিনি খাঁচা বোনার কাজই করছেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই বেত শিল্পের দক্ষ কারিগর। কিন্তু চাহিদা কম থাকায় পেট চালানোর মতো দৈনিক ২-৩টি খাঁচা বোনেন তাঁরা। এগুলো বিক্রি করে যা পান তা দেয়েই চলে সংসার।

নবী হোসেন চার ছেলে ও পাঁচ মেয়ের জনক। ছেলে-মেয়েরা বড় হয়েছে। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেরাও বিয়ে করে আলাদা থাকেন। নিজেদের কোনো জমিজমা নাই, দিনমজুরি করেন। এখন কাজ না থাকায় স্ত্রীকে নিয়ে তিনি মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কোনো সুযোগ-সুবিধাও পান না। কেউ খোঁজও নেয় না কোনো দিন।

নবী হোসেন জানান, মানুষের বাড়ি থেকে বাঁশ কিনে বেত তুলে দৈনিক দুই-তিনটা খাঁচা বুনতে পারেন। একটি বাঁশে ৫-৬টি খাঁচা হয়। বিক্রি করে যা পান তা দিয়েই কোনো রকমে সংসার চলে তাদের। একটি খাঁচা বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত।

এ বিষয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুলতানা বেগম আকন্দ বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় কুঠির শিল্পের এসব কারিগরদের কথা তিনি জানতেন না। তাঁদের সমন্বয় করে একটি সমিতি গড়ার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান তিনি। এ ধরনের কুঠির শিল্পের কারিগরদের টিকিয়ে রাখতে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ বলেন, বাঁশ-বেত শিল্পের কারিগরদের বিষয়টি জানতাম না। খোঁজ-খবর নিচ্ছি। তাদের জন্য প্রশাসনিকভাবে কিছু করার চেষ্টা করব।

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ