ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় এক ধর্ষণের ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা না নিয়ে বিবাদীর সঙ্গে মিলে মীমাংসা করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে ফরিদুল আলম নামের ওই এসআইকে আশুলিয়া থানা থেকে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, ফরিদুলকে কোনো ঘটনায় শাস্তি হিসেবে নয়, অভ্যন্তরীণ বিষয়ের অংশ হিসেবে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, তিন-চার মাস আগে আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকায় স্থানীয় সাকিব ভূঁইয়ার (২৮) সঙ্গে পরিচয় হয় ভুক্তভোগীর। এরপর তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করেন সাকিব।
গত ৬ মার্চ সর্বশেষ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে বিয়ের কথা বললে সেই নারীকে টালবাহানা করে ঘোরাতে থাকেন ওই যুবক। পরে ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ করলে তদন্তের দায়িত্ব পান আশুলিয়া থানার এসআই মো. ফরিদুল আলম। তিনি ভুক্তভোগীকে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে ঘটনাটি মীমাংসা করেন।
মীমাংসার বিষয়টি জানাজানি হলে ফরিদুল ভুক্তভোগীকে মামলা করতে বলেন। গত সোমবার এ বিষয়ে মামলা নেয় আশুলিয়া থানা-পুলিশ। ওই দিনই আসামি সাকিবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘এর আগেই এ ঘটনার মীমাংসা করা হয়েছিল। এসআই ফরিদ এবং আরও কয়েকজন স্থানীয় লোক থানায় বসেই আমাকে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে মীমাংসা করায়। তাঁরা বলেন, ‘মামলায় গেলে অনেক ঝামেলা, অনেক খরচ, তুমি মীমাংসা করে নাও। সেই টাকা থেকে আমার কাছে বিভিন্ন খরচাপাতির কথা বলে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন উপস্থিত লোকেরা। আমি ৪০ হাজার টাকা টেবিলের ওপর রেখে চলে আসি।’
ভুক্তভোগী বলেন, ‘হঠাৎ করে এসআই ফরিদ আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘‘বোন, আমার চাকরিটা বাঁচাও। তুমি থানায় এসে একটা স্টেটমেন্ট (বিবৃতি) দিয়ে যাও। পরে আমাকে থানায় ডেকে মামলা নেন।’
গতকাল এসআই ফরিদুল আলম বলেন, ‘আজ থেকে আমি পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত আছি। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমি। টাকাপয়সা নিয়ে কোনো মীমাংসা করা হয়নি। আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’ তাহলে কেন আপনাকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার সিনিয়র কর্মকর্তারা বলতে পারবেন।’
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, যেকোনো সময় যেকোনো পুলিশ বদলি হতে পারেন। এটি শাস্তিমূলক বিষয় নয়। এটি পুলিশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।