বান্দরবানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) একটি রাস্তার নির্মাণকাজ ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে বন্ধ আছে। বর্ষা ও করোনার অজুহাত দেখিয়ে ঠিকাদার কাজ বন্ধ রাখছেন। এদিকে রাস্তার কাজ শেষ না হওয়ায় এলাকাবাসী দুর্ভোগে পড়েছে।
এলজিইডির অর্থায়নে বান্দরবানের থানচি বাজার থেকে ছাংদাকপাড়া ও কলেজে যাওয়ার জন্য রাস্তার নির্মাণকাজ শুরু হয়। টেন্ডারের পর কার্যাদেশ পাওয়ার পর রাস্তার কাজও শুরু হলেও বর্তমানে এটি বন্ধ রয়েছে। এ বছরের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এতে সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদের ভোগান্তির শেষ নেই।
বান্দরবান এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরে থানচি বাজার-টিঅ্যান্ডটি পাড়া-ছাংদাক পাড়া এবং বাস স্টেশন থেকে ইউনিয়ন পরিষদ যাওয়ার মোট দেড় কিলোমিটার রাস্তার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। গত বছরের জুলাই মাসে এক কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে টেন্ডারের অনুকূলে রাস্তাটি পাকা করার কাজটি পায় এলজিইডির তালিকাভুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউটি মং।
সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি অংশ বালু ফিলিং দিয়ে ইটের খোয়া (কংক্রিট) ফেলে রেখেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। নতুন কাজের জন্য রাস্তার আগের ইট তুলে ফেলায় বৃষ্টির পানি জমে বালু-কাদায় একাকার হয়ে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
ওই রাস্তা দিয়ে ছোট-বড় যান চলাচল অব্যাহত আছে এর মধ্যে। এতে সড়ক দিয়ে লোকজনের পায়ে হেঁটে যাওয়াও কষ্টকর। অনেক শিক্ষার্থী ওই রাস্তা চলাচল করতে গিয়ে পা পিছলে আহত হয়েছে, অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। এ ছাড়া সড়কের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় চলন্ত গাড়ির চাকার কাদা পানি ছিটকে পথচারীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
ছাংদাক পাড়ার বাসিন্দা জওয়াই প্রু মারমা জানান, এক বছরের বেশি সময় আগে রাস্তার কাজ শুরু করলেও এখনো অর্ধেক কাজও শেষ হয়নি। আগের এইচবিবি রাস্তার ইটগুলো তোলার পর এভাবে কাজ ফেলে রাখা ঠিক হয়নি।
টিঅ্যান্ডটি পাড়া বাসিন্দা আহম্মদ কবিরসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, এ রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে মোটরসাইকেল চালক ও পথচারীদের অনেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। কাজটি বন্ধ থাকলেও ৬ মাস যাবত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খবর নেই।
কাজ বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ঠিকাদার ফারুক আহম্মদ চৌধুরী বলেন, গত বছরের আগস্ট মাস কাজটি বাস্তবায়নের কার্যাদেশ দেয় এলজিইডি।
যা চলতি বছরের ৩০ ডিসেম্বর সমাপ্তি হওয়ার কথা। বৃষ্টির কারণে মালামাল পরিবহনে সমস্যা হয়েছিল, এ ছাড়া কাজের রানিং বিলও পাচ্ছি না। তাই অর্থাভাবে কাজটি বাস্তবায়ন করতে দেরি হচ্ছে। শিগগিরই আবার কাজ শুরু করবেন বলে জানান তিনি।
রোববার এলজিইডি বান্দরবান কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. জামাল উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে বলেন, রাস্তার প্রায় ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। করোনা ও বর্ষার কারণে বর্তমানে কাজটি বন্ধ রয়েছে। তবে এলজিইডি থেকে কাজটি নির্ধারিত সময়ে শেষ করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। ফান্ড সমস্যার কারণে ধীরে চলো নীতির কথাও এই প্রকৌশলী স্বীকার করেন।