চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় ইউনিয়ন সমাজকর্মী মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বয়স্ক ও বিধবা ভাতার কার্ড দিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভাতা দেওয়ার নামে ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। আবার অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েও ভাতার আওতায় আনেননি বলে জানিয়েছেন কয়েকজন।
উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতার জন্য ৩ হাজার ৪৩৯ এবং বিধবা বা স্বামী নিগৃহীতা ভাতার জন্য ৩ হাজার ৫০৩ জন আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ওই ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতার জন্য ৫৫৩ ও বিধবা ভাতার জন্য ৩৩৭ জন আবেদন করেছেন।
অনলাইনে ভাতাভোগীদের উন্মুক্ত আবেদনের কথা বলা হলেও গ্রামের সহজ-সরল এ সব মানুষ ছুটছেন ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ও সমাজসেবা কার্যালয়ে। ফলে সুযোগ বুঝে এসব অসহায় মানুষের কাছ থেকে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।
বোয়ালিয়া ইউনিয়নের শাহপুর গ্ৰামের সুমিয়ারা খাতুন জানান, অনলাইনে আবেদনের কিছুদিন পর গ্ৰাম পুলিশের মাধ্যমে তাঁকে ডেকে পাঠান উপজেলা সমাজসেবার ইউনিয়ন সমাজকর্মী শফিকুল ইসলাম। পরে শফিকুল তাঁর কাছ থেকে ২ হাজার টাকা নেন। এই টাকা না দিলে ভাতার কার্ড করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন তাঁকে। পরে বাড়ির হাঁস বিক্রি করে এই টাকা দেন সুমিয়ারা।
একই গ্রামের গোলবানু বেগমের ছেলে বাহরুল ইসলাম বলেন, ‘মায়ের বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য হাঁস-মুরগি বিক্রি করে ২ হাজার টাকা শফিকুলকে দিয়েছি। এখন পর্যন্ত কার্ড পাইনি।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বোয়ালিয়া ইউনিয়নের সমাজকর্মী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ সব মিথ্যা। ভাতাভোগী বাছাইয়ে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি কারও কাছে টাকা নিইনি।’
জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভাতা কার্ড করে দেওয়ার ক্ষেত্রে সমাজসেবা অফিসের কারও বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সমাজসেবা কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এবার শতভাগ ভাতাভোগী ভাতার আওতায় আসবেন। যাদের এবার নেওয়া হয়নি, তাঁদেরকে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাঁরাও ভাতার আওতায় আসবেন। এ ব্যাপারে কাউকে কোনো অর্থ না দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।