আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় খরায় ঝরে পড়ছে আম। ঝরে পড়া সেই গুটি আম বাগান থেকে সংগ্রহ করছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। পরে ফড়িয়া আম ব্যবসায়ীদের কাছে তিন টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন তাঁরা। আর বাজারগুলোতে ঝরে পড়া সেসব গুটি আম বিক্রি হচ্ছে চার টাকা কেজি দরে।
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কিছু ফড়িয়া আম ব্যবসায়ী সকাল থেকে ভ্যানগাড়ি নিয়ে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে ঝরে পড়া আম কিনছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁরা তিন টাকা কেজি দরে আম কিনছেন। সেই আম বানেশ্বরসহ বিভিন্ন বাজারে গিয়ে পাইকারি দামে চার টাকা কেজিতে বিক্রি করবেন। অনেকে আবার এই আম বেশি লাভের আশায় বিক্রির উদ্দেশ্যে ট্রাকযোগে ঢাকায় পাঠাচ্ছেন।
স্থানীয় আমচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৈশাখের চড়া রোদে আমের বোঁটা নরম হয়ে যায়। এরপর একটু বাতাস হলেই ঝরে পড়ে গাছ থেকে। এই আম গ্রামের সাধারণ মানুষ কুড়িয়ে ফড়িয়া আম ব্যবসায়ীদের কাছে তিন টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।
উপজেলার রায়পুর গ্রামের আমবাগান মালিক ছদর উদ্দিন বলেন, এবার সারা উপজেলায় আমের মুকুল কম এসেছিল। এ জন্য আমও কম এসেছে। এর মধ্যে প্রখর রোদ ও একটু বাতাসে আম ঝরে যাচ্ছে।
একই এলাকার আমবাগানের প্রহরী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আমবাগান পাহারা দিই। মালিকেরা মাচা তৈরি করার জন্য বলেছেন। সে অনুযায়ী বাগান পাহারা দেওয়ার জন্য মাচা তৈরির কাজ শুরু করেছি। কিন্তু এখন বাতাসে কড়ালি আম ঝরে পড়ছে। সেগুলো কুড়িয়ে বিক্রি করছি। বাগানমালিকেরা এগুলোর টাকা নেন না। তিন টাকা কেজি ধরে বিক্রি করছি এসব আম।’
উপজেলার ডাকরা এলাকার কামাল হোসেন নামের মৌসুমি এক আম ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা প্রতিবছরই ঝরে পড়া কড়ালি আম কিনে ঢাকায় চালান করি। এই কড়ালি আম গতবার দেড় টাকা থেকে দুই টাকা দরে ক্রয় করছি। তবে এবার বাগানগুলোতে আম কম থাকায় তিন টাকা কেজি দরে কিনছি।’
চারঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার বলেন, এই উপজেলায় ৩ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আমগাছ রয়েছে। গত কয়েক মাস এ অঞ্চলে বৃষ্টি নেই। ফলে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। তাপমাত্রাও দিন দিন বাড়ছে। অতিরিক্ত খরার কারণে কিছু আমের গুটি ঝরছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য আমচাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, আমাদের পরামর্শ নিয়ে চাষিরা লাভবান হবেন।’