Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

বন্যার পরপরই শুষ্কতা

শাকিলা ববি, সিলেট

বন্যার পরপরই শুষ্কতা

সিলেটের বিশ্বনাথে গোয়াহরি বিলের ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া উৎসব নির্ধারিত সময়ের চার মাস আগেই উদ্‌যাপন করেছে গ্রামবাসী। কারণ, মাসখানেক আগে বন্যা হলেও এ বছর বর্ষাকালের শেষের দিকে শুকাতে শুরু করে গোয়াহরি বিলের পানি।

পানি কমে যাওয়ায় এবং অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে বিলের মাছে মড়ক দেখা দিলে গত শনিবার গ্রামের মানুষ মিলে এই উৎসব উদ্‌যাপন করে। সাধারণত এই উৎসব উদ্‌যাপন করা হয় মাঘ মাসে। শীতের শুরুতে বিলের পানি শুকাতে শুরু করলে গ্রামবাসী মিলে বিলে দিনব্যাপী মাছ ধরার জন্য দিন নির্ধারণ করেন।

পরিবেশ ও আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এমনটা হয়েছে। শুধু বিশ্বনাথের গোয়াহরি বিলেই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে পুরো সিলেটের প্রকৃতিতে। এক মাস আগেও সিলেট বিভাগের ৮০  শতাংশ  এলাকা পানিতে টইটম্বুর ছিল। অথচ শ্রাবণ মাসেই খাল-বিলে পানি নেই। কখনো অতিবৃষ্টি, কখনো অনাবৃষ্টি, ভূমিকম্প, নদীভাঙন, টিলাধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবাধে গাছপালা কাটা, নদনদী দখল ও দূষণ, পাহাড়-টিলা কাটার কারণে প্রকৃতি স্বাভাবিক নিয়মে চলতে পারছে না। তাই মানবসৃষ্ট এই দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।  

সিলেটের প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে ভয়াবহতম ছিল চলতি বছর হয়ে যাওয়া বন্যা। দুই দফা বন্যায় সিলেটে মানবিক বিপর্যয় নেমে আসে। বন্যায় মারা গেছেন ৭৮ জন। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকার।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জুন মাসে সিলেটের স্বাভাবিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৮১৮.৪ মিলিমিটার। কিন্তু চলতি বছর জুন মাসে সিলেটে ১ হাজার ৪৫৬.০২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৩৭.৬২ মিলিমিটার বেশি। তাপমাত্রায়ও ৬৫ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে সিলেট। ১৯৫৬ সালের পর গত বছরের অক্টোবর মাসে সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গত বছরের ১৪ অক্টোবর সিলেটে ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। দুই-তিন বছর ধরে সিলেটে এ রকম তাপমাত্রাই থাকছে। প্রতিবছরই সিলেটে একাধিকবার ভূমিকম্প হয়। গত বছরের ২৯ মে একই দিনে সিলেটে পাঁচবার ভূমিকম্প হয়। ৩০ মে সকালেও কেঁপে ওঠে সিলেট। পরে ৭ জুন সন্ধ্যায় মাত্র এক মিনিটের ব্যবধানে সিলেটে আবারও দুই দফা ভূমিকম্প হয়। এ ছাড়া নদীভাঙন, টিলাধসের ঘটনা তো ঘটছেই।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কোনো কিছুই আর স্বাভাবিক নিয়মে হচ্ছে না। গ্রীষ্মকালে কুয়াশা পড়ে। হাওর-বিল যখন পানিতে থইথই থাকার কথা, তখন দেখা যায় উল্টো চিত্র। এ অবস্থায় বিশ্বনাথে পলো বাওয়া উৎসব অসময়ে হচ্ছে জেনে অবাক হইনি।’

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বাপা জাতীয় পরিষদ সদস্য ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক শাকিল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এখন আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতি ও আচার-আচরণের প্রভাব ফেলছে ও ভবিষ্যতে পুরো সমাজ ব্যবস্থাকে বদলে দিবে। যার পরিণতি হবে ভয়াবহ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, প্রকৃতির এই বিরূপ আচরণের জন্য দায়ী মানুষ। সিলেট শহর ও আশপাশের এলাকায় জলাধার নেই। প্রতিনিয়ত গাছপালা, টিলা কাটা হচ্ছে। এসবের প্রভাব পড়েছে সিলেটের প্রকৃতিতে। যেমন, এ বছর আগস্ট মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৭০ ভাগ বৃষ্টি কম হয়েছে। আগামী কয়েক দিনে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এই বৃষ্টিতে মনে হয় না এ মাসের বৃষ্টিপাতের ঘাটতি পূরণ হবে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এককভাবে কাজ করে জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা সমাধান করতে পারবে না।’ 

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ