সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের জালালপুর আবাসন প্রকল্প ও গুচ্ছগ্রামের ৪টি ঘর গত ৭ দিনে যমুনায় বিলীন হয়েছে। ২৩৮টি ঘরের মধ্যে বিভিন্ন সময় নদীভাঙন, ঝড় ও আগুনে পুড়ে ৯০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন রয়েছে ১৪৮টি। সেগুলোও ভাঙনের মুখে থাকায় অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন বাসিন্দারা। এ ছাড়া আরও দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙনের মুখে রয়েছে। ভাঙন-আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন গুচ্ছগ্রামের মানুষ।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ ও ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে জালালপুর ইউনিয়নে সরকারি আবাসন ও গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের আওতায় ২৩৮টি গৃহহীন পরিবারকে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যমুনা নদীতে তীব্র ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে এনায়েতপুর থানার দক্ষিণে আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। চলতি মাসে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। এ ছাড়া জালালপুর আবাসন প্রকল্প ও গুচ্ছগ্রামের ঘরগুলোও নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
গুচ্ছগ্রামের জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ঘর ছিল। এবারের ভাঙনে ঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে আছি। জরুরিভিত্তিতে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা
না নিলে পুরো গুচ্ছগ্রাম নদীতে চলে যাবে।’
গুচ্ছগ্রামের জোসনা খাতুন আজকের পত্রিাককে বলেন, ‘প্রথম থেকে আমি গুচ্ছগ্রামে বাস করছি। এবার যেভাবে ভাঙছে তাতে আমার ঘরবাড়ি থাকবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আমরা যাঁদের সঙ্গে এত দিন বাস করছি, আজ তাঁদের অনেকেরই ঘরবাড়ি নাই। অন্যত্র চলে গেছেন। আবার কিছু লোক ভাঙনের শঙ্কায় ঘর ভেঙে নিয়ে যাচ্ছেন।’
জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য লাইলি বেগম বলেন, গত কয়েক দিনের নদীভাঙনে অনেক মানুষ ঘরবাড়ি হারা হয়েছেন। বিশেষ করে গুচ্ছগ্রামের অনেকের ঘরবাড়ি নদীতে চলে গেছে। সরকারিভাবে তাঁদের সহায়তা করা প্রয়োজন।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত শুক্রবার আমি ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। গুচ্ছগ্রাম ভাঙনের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।’ তারা জানিয়েছে, এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পাচিল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকায় নদীতীর রক্ষায় সরকার সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ইতিমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে। চলতি বছর বন্যার কারণে কাজ সাময়িক বন্ধ রয়েছে। তবে শুষ্ক মৌসুমে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হলে ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে গুচ্ছগ্রাম। তরিকুল ইসলাম আরও জানান, ঘরহীন মানুষের তালিকা করা হচ্ছে। তাঁদের অন্যত্র ঘর বরাদ্দ দেওয়ার জন্য নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে।