কুষ্টিয়া সদরে ট্রাকচাপায় ভ্যানচালকসহ চারজন নিহতের একজন স্বস্তিপুর গ্রামের আজিজুল হকের স্ত্রী জেসমিন। স্বামী মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ছিলেন তিনি। চার সদস্যের পরিবার চলত জেসমিনের আয় দিয়েই।
গতকাল সোমবার ভোর ৬টার দিকে সদর উপজেলার ভাদালিয়া দক্ষিণপাড়ায় কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জেসমিনের বড় মেয়ে রিতা খাতুন (১৪) নবম শ্রেণিতে পড়ে। আর ছেলে রাহাত (৬) এখনো স্কুলমুখী হয়নি। সে এখনো বুঝতে পারেনি তার মা আর নেই। তবে রিতা শোকে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। শত চেষ্টা করেও তাকে কথা বলাতে পারছেন না স্বজনেরা। বাড়ি ভর্তি লোক, উঠোনে বসে বিলাপ করছেন জেসমিনের মা মাজেদা খাতুন।
স্থানীয়রা জানান, একটি টিনের ছাপড়া ঘরে কোনো রকম স্বামী এবং দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন জেসমিন। স্বামীর কোনো আয় করার ক্ষমতা না থাকায় নিজের মাথায় তুলে নেন সংসারের বোঝা। জেসমিনের অকাল মৃত্যুতে এখন দিশেহারা পরিবার।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা মাজেদা বলেন, ‘জেসমিন ছিল এই সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী। ভোর থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত কারখানায় কাজ করত। বাড়ি ফিরে পুষত গরু। সংসারের বোঝা একাই টানতো সে। প্রতিদিন ২৫০ টাকা আয় করত। বেশ ভালোই চলছিল জেসমিনের সংসার। কিন্তু একটি বেপরোয়া গাড়ি সব ওলটপালট করে দিল।’