সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌর সদরের মুরারীকাটি গ্রামে গভীর রাতে লাবনী খাতুন (১৯) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তবে এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয় দাবি করে এটিকে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ লাবনীর মায়ের। গত সোমবার বিকেলে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবীর। নিহত লাবনী খাতুন উপজেলা পৌর সদরের মুরারীকাটি এলাকার আবু সাইদের স্ত্রী।
লাবনীর মা সেলিনা খাতুন বলেন, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই সাইদ মেয়েকে বেধড়ক মারধর ও নির্যাতন করত। একপর্যায়ে মেয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে। নির্যাতনের ভয়ে সেখানে যেতে না চাইলে ছেলে ও তার মা লাবনীকে আবারও শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যায়। ওই রাতেই লাবনী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পাই।
এ বিষয়ে কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার হুমায়ুন কবীর বলেন, রোববার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে নিহত গৃহবধূর স্বামী আবু সাইদ ও তার পরিবার অচেতন অবস্থায় গৃহবধূকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসলে প্রাথমিক চিকিৎসায় দেখা যায় তার মৃত্যু হয়েছে। এ সময় তার গলায় দাগ ছিল শরীরের অন্য কোথাও কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন আছে কিনা বিস্তারিত দেখতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য থানা-পুলিশের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।
সেলিনা খাতুনের অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার সারা শরীরে ক্ষতের দাগ রয়েছে। প্রশাসনের কাছে তিনি হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটন, জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
তবে লাবনীর স্বামী সাইদ বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা একই খাটে একই ঘরে ঘুম পড়ি। রাতের কোনো এক সময় আমার পাশ থেকে উঠে ঘরের আঁড়ায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে তাঁকে কলারোয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবীর বলেন, গত রোববার রাতে গৃহবধূ লাবনী আক্তার ও তার স্বামী একই কক্ষে ছিলেন। ঘুমানোর পূর্বে লাবনী আক্তার মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে তাঁর স্বামী ঘুমিয়ে যান। ঘুম থেকে উঠে রাত দুইটার দিকে আবু সাইদ লাবনীকে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাঁকে কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লাবনীকে মৃত ঘোষণা করেন। ওসি আরও বলেন, গৃহবধূর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর মূল রহস্য উদ্ঘাটিত হবে।