ভূমি ও গৃহহীনদের পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, খাদ্য নিরাপত্তাসহ ছয় দফা দাবিতে গতকাল সোমবার নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ থেকে ভূমিহীন আন্দোলনের নেতারা অবিলম্বে প্রভাবশালীদের দখলে থাকা সব খাসজমি উদ্ধার এবং পুনর্বাসন না করা পর্যন্ত ভূমি ও গৃহহীনদের উচ্ছেদ না করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল দুপুরে নগরীর গুপ্তপাড়ার বুদুবাবুর মাঠ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এতে লাল পতাকা ও বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত প্লাকার্ড হাতে নিয়ে দেড় সহস্রাধিক ভূমি ও গৃহহীন ব্যক্তি অংশ নেন। মিছিলটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে ভূমিহীন আন্দোলনের নেতা চাঁন মিয়া সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য দেন বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলার আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, সদস্যসচিব আহসানুল আরেফিন তিতু, ভূমিহীন আন্দোলনের সংগঠক শাহিদুল ইসলাম সুমন, জুবায়ের আলম জাহাজী, শাহ নেওয়াজ শুভ, মর্জিনা বেগম, কোহিনুর বেগম, শেফালী খাতুন, রুপানা বেগম, ফাতেমা আক্তার, রোকেয়া খাতুন, লিয়ন খান প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এখনো ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষ আশ্রয়ের জন্য আন্দোলন করছেন, এটা সরকারের জন্য লজ্জার। সংবিধানে দেশের সব শ্রেণিপেশার মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, কর্ম, চিকিৎসা, নিরাপত্তার কথা বলা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সমাজের অবহেলিত গৃহহীন, ভূমিহীন ও ছিন্নমূল মানুষেরা সাংবিধানিক অধিকার বঞ্চিত হচ্ছেন। সবকিছু সমাজের বিত্তবান ও আমলাতন্ত্রের কাছে জিম্মি। গৃহ ও ভূমিহীনেরা আজও পুরোপুরি স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করতে পারছে না।
নেতারা দাবি করেন, অবিলম্বে সব ভূমিহীনের পুনর্বাসন করতে হবে। পুনর্বাসন মানে শুধু থাকার ঘর নয় সঙ্গে কর্মসংস্থান ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রংপুরে যেসব খাসজমি প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে, তা উদ্ধার করতে হবে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারাতে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে সবকিছুর দাম হু হু করে বেড়ে চলছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম কমাতে হবে। শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের সব মানুষকে আর্মি রেটে রেশন দিতে হবে। মানুষকে বাঁচাতে হলে ভূমি ও গৃহহীনদের ন্যায়সংগত দাবির প্রতি সরকারকে গুরুত্বারোপ করতে হবে।
এ সময় নেতারা নগরীর মাহিগঞ্জ সাতমাথা এলাকায় বস্তি উচ্ছেদে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনকে দ্রুত ক্ষতিপূরণ দিয়ে পুনর্বাসনের কথাও বলেন। অন্যথায় ভবিষ্যতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।