Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

একটিমাত্র শ্রেণিকক্ষ, মেঝেতে বসে চলছে পাঠদান

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই (রাঙামাটি)

একটিমাত্র শ্রেণিকক্ষ, মেঝেতে বসে চলছে পাঠদান

রাঙামাটির কাপ্তাই সদর ইউনিয়নের ভাঙ্গামুড়া, আড়াছড়ি মৈন ও তাইতংছড়া পাড়ায় প্রায় ১৩০ পরিবারের বাস। এসব পরিবারের শিশুদের পড়ালেখার জন্য ভাঙ্গামুড়া এলাকায় স্থাপিত একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়টি দেড় দশকেও জাতীয়করণ না হওয়ায় এখন বন্ধের উপক্রম।

স্থানীয়দের উদ্যোগে স্থাপিত বিদ্যালয়ের মাত্র একটি কক্ষে পাঁচটি শ্রেণির পাঠ দেওয়া হয়। অর্থের জোগান না থাকায় শিক্ষকদের বেতনও অনিয়মিত। পাড়ার আশপাশে সরকারি প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয় না থাকায় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা।

উপজেলা সদর থেকে সড়কে ১৫ কিলোমিটার গেলে কাপ্তাই লেকসংলগ্ন জেটিঘাট। সেখান থেকে ইঞ্জিনচালিত বোটে প্রায় দেড় ঘণ্টা গেলে ভাইজ্জাগোড়া এলাকা। সেখান থেকেও তিন কিলোমিটার উঁচু-নিচু পাহাড়ি পথ পেরিয়ে পৌঁছাতে হয় ভাঙ্গামুড়া গ্রামে।

সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ভাঙ্গামুড়া, আড়াছড়ি মৈন ও তাইতংছড়া পাড়ায় মূলত তঞ্চঙ্গ্যা, মারমা ও চাকমা জনগোষ্ঠীর চার শতাধিক মানুষের বাস। এর আশপাশে কোনো সরকারি প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয় নেই।

ভাঙ্গামুড়া এলাকার কিছু শিক্ষিত যুবক উদ্যোগ ও বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় ২০০৭ সালে ভাঙ্গামুড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। এর পর দেড় দশক পেরিয়ে গেলেও বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হয়নি। বেড়ার তৈরি একমাত্র ঘরে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। বিদ্যালয়ে নেই কোনো বেঞ্চ। মেঝের অবস্থাও জরাজীর্ণ। এর মধ্যেই বসে ক্লাস করে শিক্ষার্থীরা। এদিকে বিদ্যালয়ে নিয়মিত তিনজন শিক্ষক থাকলেও, সময়মতো বেতন পান না তাঁরা। মাঝেমধ্যে পেলেও তা পর্যাপ্ত নয়।

বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা আনন্দজয় তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘বর্তমানে সব মিলিয়ে ৫০ জন শিক্ষার্থী আছে। শ্রেণিকক্ষ মাত্র একটি। পালা করে আমরা প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নিই। স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া মাসিক যৎসামান্য টাকায় আমরা তিনজন বেতন নিই। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পরিবার অতিদরিদ্র। ফলে সবার বেতন নেওয়া সম্ভব না। ধরতে গেলে, আমরা এলাকার টানে স্বেচ্ছাশ্রমে বছরের পর বছর পড়াচ্ছি।’

প্রধান শিক্ষক জানান, বছরের প্রথমদিকে শুধু উপজেলা শিক্ষা বিভাগ থেকে তাঁদের পাঠ্যপুস্তক দেওয়া হয়। বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ হলে সবাই উপকৃত হবে।

বিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জীবক তঞ্চঙ্গ্যা, বিশন্ত তঞ্চঙ্গ্যা ও কান্তি বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা জানান, শিশুদের কথা চিন্তা করে এলাকাবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে ২০০৭ সালে একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এনজিও গ্রিনহিলের অর্থায়নে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হতো। বর্তমানে কোনো রকম অনুদান ছাড়া এই বিদ্যালয় চলছে। এটি সরকারীকরণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নবীন কুমার তনচংগ্যা জানান, ২০১১ সালে তৎকালীন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য) অংসুই ছাইন চৌধুরী ওই উদ্যোগ একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। রাঙামাটি জেলা পরিষদ এতে অর্থায়ন করে। বর্তমানে এটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ইউপি সদস্য জানান, যোগাযোগ, পানি, বিদ্যুৎসহ গ্রামে আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া নেই বললেই চলে।

কাপ্তাই ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ বলেন, ‘৩ নম্বর ওয়ার্ডের হরিণছড়া এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। কিন্তু সেটা ভাঙ্গামুড়া, আড়াছড়ি মৈন ও তাইতংছড়া পাড়া থেকে বেশ দূরে। এই তিন পাড়া মিলে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হলে এলাকার শিশুরা শিক্ষার সুযোগ পাবে।’

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইদ্রিচ বলেন, ‘বেসরকারি স্কুল জাতীয়করণে আমাদের হাত নেই। আমরা প্রতিবছর এই বিদ্যালয়ে বই দিয়ে থাকি।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ