ময়মনসিংহে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও ধর্মী ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদ্যাপন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দিনটিতে সবার মুখেই ছিল করোনামুক্ত ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার বাণী। বড়দিন উপলক্ষে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয় নগরীতে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে শহরের কৃষ্টপুর এলাকায় ময়মনসিংহ ক্যাথলিক ধর্মপ্রদেশ সাধু পেট্রিকের ক্যাথেড্রাল গির্জায় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সব বয়সের খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা একত্র হতে থাকেন। সকাল ৯টায় প্রার্থনা শুরু হয়ে চলে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত।
সাধু পেট্রিকের ক্যাথেড্রাল গির্জায় বড়দিনের প্রার্থনা করান ময়মনসিংহ ধর্ম প্রদেশের ধর্মপাল বিশপ পনেল পৌল কুবি।
প্রার্থনায় করোনামুক্ত বিশ্ব, মানবজাতির শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সন্ত্রাস জঙ্গিবাদমুক্ত ও সমৃদ্ধশীল দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা। প্রার্থনা অনুষ্ঠানে ময়মনসিংহে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকেরা অংশগ্রহণ করেন। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি আনন্দ উদ্যাপন করেছেন মুসলমানরাও।
এ ছাড়া শহরের অন্যান্য গির্জায়ও একই ধরনের আচার অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে। শহরের খ্রিষ্টান-অধ্যুষিত এলাকায় রঙিন বাতিসহ বিভিন্ন ধরনের সাজে সজ্জিত করা হয়। এ উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন উপাসনালয়, গির্জা, কবরস্থান এবং বড় দিন উদ্যাপন অনুষ্ঠানের স্থানগুলোয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা যিশুর কাছে প্রার্থনা করার আগের দিনই তাঁদের পাপ স্বীকার করে মনকে সাজিয়ে পরে প্রার্থনা আর উৎসবে মেতে ওঠেন।
প্রার্থনা অনুষ্ঠানে গ্রেনার মারাক, গ্রেচে আজিম এবং কেটরিন স্নিগ্ধা জানান, করোনা উপেক্ষা করে সারা বছর যেন সবাই ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন, এই প্রার্থনা করেছেন ঈশ্বরের কাছে। তা ছাড়া সারা দিন প্রিয়জনদের শুভেচ্ছা জানানো ও ভালো খাওয়া-দাওয়া ও ঘোরাঘুরি করে সময় কাটান।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ প্রদেশের ধর্মপাল বিশপ পনেল পৌল কুবি বলেন, প্রায় দুই হাজার বছর আগে মানুষের কল্যাণের জন্যই জন্ম নেয় যিশুখ্রিষ্ট। এ জগতে মানুষের হানাহানি, মারামারি ও অশান্তি দূর করার জন্যই যিশুখ্রিষ্টের জন্ম হয়। তাঁকে অনুসরণ করেই আমাদের আগামীর পথ চলা।
হালুয়াঘাট: বড়দিনে হালুয়াঘাটের গির্জাগুলোয় প্রার্থনা ও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গতকাল শনিবার সকালে বিশেষ প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে দিনটি উদ্যাপন করেছেন খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ। এদিন বিড়ইডাকুনী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সবাইকে শুভেচ্ছা জানানো হয় এবং কেক কাটা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাংসদ জুয়েল আরেং, জীবন বীমা করপোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার আদিন্দ্র দ্রং, ইউএনও মো. রেজাউল করিম প্রমুখ।