গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে ঝাড়ুদার দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত বুধবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে অনেকে সেবাদানে অনিয়ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় জরুরি বিভাগে গোবিন্দ নামের একজন ঝাড়ুদারকে রোগীদের সেবা দিতে দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসিফ ফেরদৌস স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গোবিন্দকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি কমপ্লেক্সে ঝাড়ু দেওয়ার পাশাপাশি জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়ার কাজেও হাত লাগান।
স্থানীয় বাসিন্দা হাবিব জানান, গোবিন্দ শুধু জরুরি বিভাগেই চিকিৎসাসেবা দেন না, করোনার সময় তিনি টিকা দেওয়ার কাজও করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোবিন্দ বলেন, ‘স্যাররা ব্যস্ত থাকলে আমি মাঝেমধ্যে জরুরি রোগীদের ব্যান্ডেজের কাজ করে দেই।’
এদিকে হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা।
পজেলার বড়বিল ইউনিয়ন থেকে আসা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমার ছেলের পা কেটে গেছে। এ জন্য ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। ডাক্তাররা প্রেসক্রিপশন লিখে দিল। সবকিছু বাইরে থেকে কিনে এনে দিলাম। খালি শুনি, সরকার গরিব মানুষের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল থাকি সব ওষুধ ফ্রি দেয়। কিন্তু হাসপাতাল আসি দেখি সবকিছু নিজেকে কিনা লাগল।’
সদর ইউনিয়নের বোল্লারপড় থেকে আসা আমেনা বলেন, ‘আমার স্বামী টিনের ঘর তৈরি কাজ করেন। আজকে ঘর তৈরির সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। আমার স্বামীর নাক-মুখ দিয়ে শুধু রক্তক্ষরণ হচ্ছিল, প্রায় এক ঘণ্টা ধরে। তাঁকে নিয়ে জরুরি বিভাগের রুমে কান্নাকাটি করছিলাম। কিন্তু কোনো ডাক্তার, নার্স আসেনি। পরে এলাকার ভাই-ভাতিজারা একটি প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সে করে রংপুর মেডিকেলে নিয়ে গেল।’
এ বিষয়ে কথা হলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তুলি আক্তার বলেন, ‘আমরা চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পরও যদি কেউ অভিযোগ করেন, তাহলে আমাদের কী করার আছে বলেন?’
অন্যদিকে ঝাড়ুদারের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা নুসরাত আর্নিকা বলেন, ‘আমার বিষয়টি জানা নেই। তবে টিএইচও স্যারকে বিষয়টি জানানো হবে।’
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) আসিফ ফেরদৌস বলেন, ‘বিষয়টি আমাকে আবাসিক মেডিকেল অফিসার অবগত করেছেন। এ রকম কাজ পরবর্তীতে যাতে না হয় তা ভালোভাবে দেখব।’