খুলনা পাবলিক কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ফাহমিদ তানভীর রাজিন হত্যা মামলায় ১৭ আসামিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তাদের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে যেসব আসামির বয়স ১৮ বছরের নিচে, তাদের সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৩ ও শিশু আদালতের বিচারক মো. আ. ছালাম খান এ রায় ঘোষণা করেন। এদিকে রায় ঘোষণার পর আসামিরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদ আহমেদ জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে কনসার্ট দেখার জন্য কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা হয় রাজিন। রাতে অনুষ্ঠান স্থলে বসাকে কেন্দ্র করে আসামি তামিমের সঙ্গে রাজিনের হাতাহাতি হয়। রাত ৯টার দিকে রাজিনকে অনুষ্ঠানের মঞ্চের পেছনে নিয়ে গিয়ে চড় থাপ্পড় ও ছুরিকাঘাত করা হয়। রাজিন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আসামিরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় রাজিনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর নিহতের পিতা আলম বাদী হয়ে বাদী মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে সাব্বির হাওলাদার, বিএম মাজিব হাসান রয়েল, শাহারিয়ার জামান তুর্য্য, রিয়ান শেখ ওরফে রেফাত, ফাহিম ইসলাম মনি, সানি ইসলাম ওরফে আপন এই ৬ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাতনামা ১০ জনের বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি খালিশপুর থানার এসআই মো: মিজানুর রহমান ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ২৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
নিহতের পরিবার রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলেও সন্তোষ প্রকাশ করতে পারেননি। নিহতের মা রেহেনা হোসেন বলেন, আসামিরা শিশু হলেও তাদের কর্মকাণ্ড শিশুর মতো না। তিনি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ বলেন, রায়ে তিনি সন্তুষ্ট। এদিকে আসামিদের আদালত থেকে বের করে প্রিজন ভ্যানে ওঠানোর সময় তারা পুলিশের ভ্যানে লাথি মারে। এ সময় পুলিশ ও সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে অশ্লীল উক্তি করে পানি ও জুতা নিক্ষেপ করে।