ধনবাড়ীতে গ্রামীণ নারীদের বাল্যবিবাহ রোধ, নারী প্রতি সহিংসতা, জঙ্গিবাদ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ও সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের স্বনির্ভর হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সরকারের তথ্য আপা প্রকল্প। এই তথ্য আপার মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাও। এই প্রকল্পের সহযোগিতায় অনেকেই হয়েছেন উদ্যোক্তা। বিভিন্ন চাকরির তথ্যও দেওয়া হয় এই তথ্য আপা কেন্দ্র থেকে।
উপজেলা ‘তথ্য আপা’ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার একটি পৌর সভা ও সাতটি ইউনিয়নে পিছিয়ে পড়া নারীদের নিয়ে কাজ করছে তথ্য আপা। এ তথ্য আপা কেন্দ্রে একজন তথ্য আপা (তথ্য সেবা কর্মকর্তা) ও দুজন সহকারী রয়েছেন।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে তৃণমূলের নারীদের নিয়ে চলে উঠান বৈঠক। বৈঠকে অংশ নেন বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, উপজেলার কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা। শিক্ষা, কৃষি, আইন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, চাকরির আবেদন, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডি কার্ডসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা হয় বৈঠকে অংশ নেওয়া নারীদের।
এ তথ্যকেন্দ্র থেকে গত বছরের ৮ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সেবা নিয়েছেন ১২ হাজার ৬ জন। ডোর টু ডোর সেবা প্রদান করা হয় ৭ হাজার ৮৫০ জনকে। আর উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হয় ৪ শ ৭৭ জনকে।
যদুনাথপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের নারী উদ্যোক্তা আসমাউল হোসনা বলেন, ‘পাঁট জাত পণ্যের ওপর প্রশিক্ষণ নেই। বর্তমানে আমি উদ্যোক্তা। বাজারে আমার তৈরি বিভিন্ন পণ্যের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। তবে সরকার যদি ঋণের ব্যবস্থা করত তাহলে ব্যবসার পরিধি বাড়ত। পাশাপাশি শিক্ষিত নারী বেকারদের আমার প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।’
সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ জামালপুরের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আসিয়া আক্তার বলেন, ‘আমি তথ্য আপা কেন্দ্রের মাধ্যমে জানতে পারি ব্রাক ব্যাংকে কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। পরে চাকুরীর জন্য আবেদন করি। চাকরি হয়। এ জন্য তথ্য আপাকে ধন্যবাদ জানাই।’
তথ্য সেবা কর্মকর্তা আফসানা ফেরদৌস বলেন, ‘তৃণমূলের নারীদের সেবা প্রদান করাই এই প্রকল্পের কাজ। আমরা পিছিয়ে পড়া নারীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
ধনবাড়ী উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান জেব-উন-নাহার লীনা বকল বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ নারীরা যেন কারও বোঝা না হন। এ জন্য এ প্রকল্পের আওতায় নারীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করা হচ্ছে।’