‘মুক্তিযুদ্ধের পর দ্যাশ স্বাধীন হোয়াছে। তখুন একবার খুশিতে ক্যাইন্দ্যাছি। এরপর বঙ্গবন্ধু সেতুর উদ্বোধনের দিন খুশিতে আত্মহারা হোয়্যাছি। এখুন পদ্মা সেতুর কারণে আরেকবার খুশি হোনু। জীবন তো এখুন শ্যাষের পথে। জীবনে আর এমুন আনন্দ পাব না।’ পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর এমন কথাই বলছিলেন রাজশাহীর আজাহার আলী (৬৬)।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে যে শুধু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ খুশি, তা নয়। আনন্দিত উত্তরাঞ্চলের মানুষও। সে কথা ভালোভাবেই বোঝা গেল রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) পরিচ্ছন্নতা বিভাগের সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত আজাহার আলীর কথায়। তিনি বললেন, এমন আনন্দিত তিনি অনেক দিন হননি, যতটা এই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর হলেন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসন গতকাল শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মূল অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থা করেছিল। জেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। ছিলেন পুলিশ ও প্রশাসনের বিভাগীয় এবং জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারাও। সে অনুষ্ঠানে লাল-সবুজ পাঞ্জাবি পরে এসেছিলেন আজাহার আলী। সংস্কৃতিমনা আজাহারের দুই হাতে ছিল দুটি ঝুনঝুনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করার পর দুই হাতের ঝুনঝুনি বাজিয়ে নাচতে শুরু করেন আজাহার। পেছনে বসে থাকা পুলিশ-প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তা উপভোগ করেন। নাচ শেষে আজাহার আলী বললেন, ‘১৬ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। এখন বয়স ৬৬। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর খুশিতে আত্মহারা হোয়্যাছি। তারপর যখুন বঙ্গবন্ধু সেতু হলো, তখন খুশিতে নেচেছি। আইজ আবার সেই দিন। এককালে তো আমরাও ফেরিতে যমুনা পার হোয়্যাছি। সেই কষ্ট আমরা বুঝি। তাই পদ্মা সেতুর আনন্দ বুঝি।’
আজাহার বলেন, ‘লাখো লাখো মানুষের মুখে হাসি আইনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে জানভরে দোয়া করি। আত্মাভরে দোয়া করি। শেখ হাসিনা এই সেতু কইর্যা দেখিয়েছেন। বাঙালি জাতি কখনো হার মানে না। শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন।’